শেরপুরের নকলায় রাস্তার পাশে গলাকাটা লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেফতাররা হলেন- মুনসুর আলী (৪০), আশিক মিয়া (২৫) ও আমির হোসেন (৩৫)।

সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনের পর সিআইডি বলছে, নিহতের নাম মুনছুর আলী ফকির (৩৬)। তিনি জামালপুর ইসলামপুর থানার কাচিহারার হানিফউদ্দিনের ছেলে।

ধারের পাওনা টাকার চাওয়ায় পরিকল্পিতভাবে গত ১২ ডিসেম্বর শেরপুরের নকলা উপজেলার ধনাকুশা নদীরপাড়ের কাঁচা রাস্তায় গলা কেটে হত্যা করা হয় মুনছুরকে।

আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর। 

তিনি বলেন, গত ১২ ডিসেম্বর শেরপুরের নকলা উপজেলার ধনাকুশা নদীরপাড়ের কাঁচা রাস্তার উপর থেকে অজ্ঞাত এক যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে জানা যায়, তার নাম মুনছুর আলী ফকির (৩৬)। তিনি বিভিন্ন যানবাহনে হেলপারের কাজ করতেন। ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বাবা হানিফ উদ্দিন (৬১) অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে শেরপুর জেলার নকলা থানায় মামলা দায়ের করেন। হত্যাকাণ্ডের গুরুত্ব বুঝে সিআইডি ছায়া তদন্ত শুরু করে। 

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, হত্যার ঘটনাটি কেন এবং কিভাবে সংগঠিত হয়েছে, ঘটনায় কে বা কারা জড়িত, কারো সাথে পারিবারিক/ব্যবসায়িক পূর্ব কোনো বিরোধ ছিল কি না বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর ভিকটিমের পরিবার, ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকার বিভিন্ন উৎস হতে সরেজমিনে সংগ্রহ করা হয়। 

পরবর্তীতে সংগৃহীত বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্ত বিচার বিশ্লেষণ করে জানা যায়, জামালপুরের মুনসুর আলী (৪০), গাজীপুর শ্রীপুরের আশিক মিয়া (২৫) ও শেরপুর নকলার আমির হোসেন (৩৫) হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত।

পরবর্তীতে এলআইসির একাধিক চৌকস টিম হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত আসামিদের গ্রেফতারের জন্য সম্ভাব্য বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে। এরই ধারাবাহিকতায় গতরাতে ওই তিনজনকে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা জানায়, নিহত মুনছুর আলী ফকির গ্রেফতার মুনসুরকে ছয় মাস আগে টাকা ধার দিয়েছিল। পরিমাণে ধারের সে টাকা অল্প হলেও তা পরিশোধ করছিল না মুনসুর। ওই পাওনা টাকা আদায়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে মুনসুরের সঙ্গে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরবর্তীতে মুনসুর অন্যদের সহযোগিতায় পূর্বপরিকল্পিতভাবে ভিকটিমকে ডেকে নিয়ে গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যা করে।

জেইউ/এইচকে