আনুষ্ঠানিকভাবে দেশে করোনাভাইরাসের বুস্টার ডোজ টিকা প্রয়োগ শুরু হয়েছে। প্রথম দিনে বুস্টার ডোজ নিতে মানুষের মধ্যে বেশ আগ্রহ দেখা গেছে। দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন টিকা নিতে এসেছেন। যারা মেসেজ পেয়েছেন শুধু তাদেরই টিকা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু অনেকে মেসেজ না পেয়েও টিকা নিতে হাজির হয়েছেন। এছাড়া টিকা কার্ড নিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে কাউকে কাউকে।  

মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। এই কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে বুস্টার ডোজ প্রয়োগ শুরু হয়েছে।

টিকাদানের দায়িত্বে থাকা ডা. শারমীন জাহান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ১০-১২টি বুথে আমরা টিকা দিচ্ছি। সকাল ৮টা ১০ মিনিটে আমরা প্রথম একজনকে টিকা দেই। এরপর থেকে আগ্রহের সঙ্গে অনেকেই টিকা নিয়েছেন। টিকার মেসেজ আসেনি এমন লোকজনও টিকা নিতে এসে ফিরে গেছেন বলে জানান তিনি।

জানা গেছে, করোনার বুস্টার ডোজ নিতে সম্পূর্ণ নতুন একটি টিকা কার্ড প্রিন্ট করে আনতে হবে। আগের দুই ডোজ টিকার কার্ড নিয়ে এলে হবে না। নতুন টিকা কার্ডে নির্দিষ্ট বুথ থেকে স্বাক্ষর নিয়ে টিকা নেওয়া যাবে।

ঢামেকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, প্রথম দিনে সাড়ে ৫শ ব্যক্তিকে টিকা নেওয়ার জন্য মেসেজ পাঠানো হয়েছে। দুপুরের মধ্যে এলে তারা টিকা পাবেন।

প্রথম দিনে টিকা নিতে আসা মানুষের মধ্যে বেশ আগ্রহ দেখা গেছে। মতিঝিল থেকে এসেছেন ষাটোর্ধ্ব আবদুর রাজ্জাক। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল (সোমবার) রাত ৯টায় বুস্টার ডোজের মেসেজ আসে। সকালে কার্ড প্রিন্ট করে টিকা দিতে এসেছি। আগেও টিকা দিতে অসুবিধা হয়নি, এবারও না।

তবে অনেকে ভোগান্তিতেও পড়েছেন। মেসেজে নির্দিষ্ট গাইডলাইন না পাওয়ার অভিযোগ করেন তারা। ধানমন্ডি থেকে আসা ইলিয়াস হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল রাত ১২টায় মেসেজ পেয়েছি। সেখানে টিকা কার্ড প্রিন্ট করে আনতে বলা হয়নি। এজন্য সকালে কিছুটা সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে। তবে টিকা নেওয়ায় কোনো সমস্যা হয়নি বলে জানান তিনি।

তোপখানা রোড থেকে আসা মাহমুদুল হাসান মানিক ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল রাতে আসা মেসেজে টিকা কার্ড আর এনআইডি কার্ড আনতে বলা হয়েছে। আমি দুই ডোজ টিকা নেওয়ার কার্ড আর এনআইডি কার্ড নিয়ে এসেছিলাম। তারা বলছে, টিকা দেওয়া যাবে না। নতুন করে আরেকটা টিকা কার্ড প্রিন্ট দিয়ে আনতে হবে। সেটা তো আমাদের মেসেজের মধ্যে বলে দিলেই হতো। যদি ঢাকার বাইরে থেকে আসতাম, তাহলে কীভাবে টিকা নিতাম।

এছাড়া অনেকে মেসেজ পেলেও সার্ভার সমস্যার কারণে তাদের টিকা গ্রহণে দেরি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ জানান কয়েকজন। নাসিমা আক্তার নামে এক গৃহিণী বলেন, টিকা নেওয়ার মেসেজ এলেও তারা বলছে সার্ভারে দেখা যাচ্ছে না। এটা কি আমাদের দোষ। তাদের সার্ভার সমস্যার কারণে আমরা কেন ক্ষতিগ্রস্ত হব।

জানতে চাইলে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সহকারী পরিচালক (ফিন্যান্স ও স্টোর) ডা. মো. আশরাফুল আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, মেসেজ পাওয়া সাড়ে ৫শ জনকে আজ টিকা দেওয়া হবে। তবে নির্দেশনা পেলে এক হাজার জন পর্যন্ত টিকা দিতে পারব। প্রথম দিন বলে মেসেজ আর নির্দেশনা সংক্রান্ত কিছু জটিলতা হয়ত দেখা দিয়েছে। আশা করছি, কাল থেকে এ সমস্যা হবে না।

এএজে/এসএসএইচ