নারীকণ্ঠে অনৈতিক কাজের প্রলোভন দেখিয়ে প্রবাসী যুবকদের ইমো আইডি হ্যাক করে চক্রটি। এরপর নানাভাবে ব্ল্যাকমেল করে হাতিয়ে নেয় বিপুল পরিমাণ টাকা। 

চক্রটির দেড় শতাধিক সদস্যের পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। বুধবার রাতে রাজধানী, আশুলিয়া ও নাটোর থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতাররা হলেন হুসাইন আলী (১৯), সুমন আলী (২৩), তরিকুল ইসলাম (২১), শান্ত আলী (১৯) ও সাদ্দাম হোসেন (১৯)। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির অতিরিক্ত ডিআইজি কামরুল আহসান।

তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নাটোর-রাজশাহীকেন্দ্রিক একদল কিশোর ও যুবক ইমো হ্যাকিংকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে। তাদের কাছে এটি স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা প্রবাসী যুবকদের ইমোতে অনৈতিক কাজের প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তাদের পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছি। বিশাল একটি নেটওয়ার্কের সন্ধান আমরা পেয়েছি। দেড় শতাধিক সদস্য এমন প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে।

সিআইডি কর্মকর্তা কামরুল আহসান বলেন, চক্রটি প্রথমে আইডি সার্চ দিয়ে প্রবাসীদের খুঁজে বের করে। এরপর নারী সেজে নানা গল্প-কথায় এগোতে থাকে। এক পর্যায়ে অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দেয়। নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকায় রাজি হলে চক্রটি মোবাইলের রিয়ার ক্যামেরায় অন্য কোনো কিশোরী বা নারীর ভিডিও চালু করে আড়ালে নারীকণ্ঠে কথা বলতে থাকে। 

এতে প্রবাসী যুবকের কাছে আসল নারী মনে হতে থাকে। এভাবে এক সময় আরও ক্লোজ হতে হতে প্রবাসীর ইমো আইডি হ্যাক করে নয়ে ওটিপি কোড হাতিয়ে নেয় চক্রটি। এ প্রতারকরা প্রথমত পুরুষ হয়েও নারী সেজে কথা বলে টাকা নিচ্ছে। দ্বিতীয়ত, তারা ইমো হ্যাক করে ইমো মালিকের কোনো অনৈতিক ছবি বা ভিডিও পেলে সেটি দিয়ে ব্ল্যাকমেলের মাধ্যম লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

কামরুল আহসান বলেন, আমরা দেখেছি নাটোরের লালপুর এলাকায় এ ধরনের প্রতারকদের আধিপত্য বেশি। তাদের সঙ্গে আরও দেড় শতাধিক সদস্য কাজ করছে। তারা সবাই একটি নেটওয়ার্কে কাজ করলেও চার-পাঁচজনের গ্রুপে বিভক্ত হয়ে প্রতারণা চালিয়ে যায়।

এক প্রশ্নের জবাবে সিআইডির এ কর্মকর্তা বলেন, তাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তেমন নেই। কিন্তু তারা সবাই এক সঙ্গে কাজ করার কারণে একে অপরের কাছ থেকে প্রতারণার কৌশলগুলো সহজে রপ্ত করে নিচ্ছে। আমরা এ চক্রের বাকি সদস্যদেরও আটকে চেষ্টা চালাচ্ছি।

তাদের টার্গেট কেন প্রবাসীরা, এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রবাসীরা দীর্ঘ জীবন পরিবার বঞ্চিত থাকেন। তারা মাঝে মাঝে বিনোদনের খোঁজে ইমোতে যানা। আর সেখানেই প্রতারণার শিকার হন।

এমএসি/আরএইচ