রাজধানীর বনানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মহুয়া হাজংয়ের বাবা সাবেক বিজিবি সদস্য মনোরঞ্জন হাজংয়ের চিকিৎসার জন্য আর্থিক অনুদান দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় ডিএমপির সদর দফতরে আর্থিক অনুদান হিসেবে নগদ ৮ লাখ ৪২ হাজার ২০০ টাকা সার্জেন্ট মহুয়া হাজংয়ের হাতে তুলে দেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান।

গত ২ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ি সড়কে একটি দ্রুতগতির গাড়ির চাপায় আহত হন সার্জেন্ট মহুয়ার বাবা মনোরঞ্জন হাজং। তাকে উদ্ধার করে শ্যামলীর পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়। অস্ত্রোপচার করে তার ডান পা কেটে ফেলতে হয়েছে। এরপর শাহবাগের বারডেম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় তাকে।

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত মনোরঞ্জন হাজং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) অবসরপ্রাপ্ত হাবিলদার। তার মেয়ে মহুয়া হাজং ট্রাফিক সার্জেন্ট হিসেবে ডিএমপিতে কর্মরত। দুর্ঘটনার পর তিনি থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ প্রথমে মামলা নেয়নি। এমনকি ঘটনার পর পথচারীরা চাপা দেওয়া সেই গাড়ি ও চালকসহ অন্য যাত্রীদের আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিলেও তারা ছাড়া পেয়ে যায়।

দুর্ঘটনার সময় গাড়িতে চালকের আসনে ছিলেন বিচারপতি রেজাউল হাসানের ছেলে সাইফ হাসান। তার স্ত্রী অন্তরা সাইফ এবং তাদের বন্ধু রোয়াদও গাড়িতে ছিলেন। দুর্ঘটনার পরই প্রভাবশালীদের চাপে গাড়ি ও যাত্রীদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ। একইসঙ্গে তারা মহুয়া হাজংয়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আপসের চেষ্টা চালায়। কিন্তু মহুয়া হাজং মামলার বিষয়ে অটল থাকায় এবং গণমাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। আইনি ব্যবস্থা না নেওয়ায় অনেক পুলিশ কর্মকর্তাও ক্ষুব্ধ হন।

এ ঘটনায় বনানী থানায় জিডি করেন অভিযুক্ত সাইফ। তিনি জিডিতে অভিযোগ করেন, তার গাড়িটি মনোরঞ্জনের মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়নি। বরং তার গাড়িতে বেআইনিভাবে উল্টো দিক থেকে এসে মনোরঞ্জনই ধাক্কা দেন। এতে তিনি ও তার স্ত্রীর প্রাণহানির মতো অবস্থা তৈরি হয়েছিল। উল্টো পথে মোটরসাইকেল চালানোর জন্য এ দুর্ঘটনার দায়-দায়িত্ব মনোরঞ্জনের ওপরই বর্তায়।

এমএসি/এমএইচএস