জানুয়ারি থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী যাবে, আশা মন্ত্রীর
জানুয়ারি থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী যাওয়া শুরু করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। কর্মী যাওয়ার প্রক্রিয়া জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ডাটাব্যাংক থেকে হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
মালয়েশিয়ার সঙ্গে কর্মী প্রেরণে সমঝোতা স্মারক বা এমওইউ স্বাক্ষরের দুদিন পর মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, আমরা মালয়েশিয়ার সঙ্গে এমওইউ সই করেছি। এখনও মার্কেট খোলেনি। এমওইউর পরের প্রক্রিয়ায় মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে দুই একদিনের মধ্যে একটা প্রস্তাব আসবে। এ শ্রমবাজার খোলা নিয়ে আমরা তিন বছর অপেক্ষা করেছি। আশা করি জানুয়ারি থেকে কর্মী যাওয়া শুরু হবে।
রোববার কুয়ালালামপুরে মালয়েশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ। প্রবাসীমন্ত্রী ইমরান আহমদ ও মালয়েশিয়া সরকারের মানবসম্পদমন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভানান নিজ নিজ দেশের পক্ষে এমওইউ সই করেন।
ইমরান আহমদ বলেন, কর্মী যাবে বিএমইটির ডাটাবেজ থেকে। কীভাবে যাবে সেটা আমরা ঠিক করব। কর্মীরা ন্যূনতম খরচে সেখানে যেতে পারবেন। বাংলাদেশ প্রান্তে যে খরচ হবে সেটা কর্মী বহন করবে। আর সেই খরচ খুব কম হবে। মন্ত্রণালয় থেকে সেই খরচ নির্ধারণ করে একটা ধারণা দেওয়া হবে। আগে সরকার নির্ধারিত অভিবাসন ব্যয় এক লাখ ৬০ বা ৬৫ যাই থাকুক না কেন, এখনও এটা অনেক কমে আসবে। কারণ কর্মীর ব্যয়ের বেশিরভাগ খরচই নিয়োগকর্তা বহন করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, মালয়েশিয়ার সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী মালয়েশিয়া প্রান্তের খরচ এবং বিমান টিকেট নিয়োগ কর্তা দেবেন। আর বাংলাদেশ অংশে কর্মী খরচ বহন করবেন। আমরা ডাটাবেসের বাহিরে কোনো কর্মী পাঠাব না। আমরা বিএমইটির তালিকা থেকে কর্মী পাঠাব।
লিখিত বক্তব্যে সচিব জানান, এ সমঝোতা স্মারকের আওতায় বাংলাদেশি কর্মীদের মালয়েশিয়া প্রান্তের সব খরচ নিয়োগকর্তা বহন করবেন। যেমন রিক্রুটমেন্ট এজেন্সি নিয়োগ, মালয়েশিয়ায় নিয়ে যাওয়া, তাদের আবাসন, কর্মে নিয়োজিত করা এবং কর্মীর নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর খরচ বহন করবেন। নিয়োগকর্তা নিজ খরচে মালয়েশিয়ান রিক্রুটিং এজেন্ট নিযুক্ত করতে পারবেন।
মালয়েশিয়ায় আসার পর বাংলাদেশি কর্মীর ইমিগ্রেশন ফি, ভিসা ফি, স্বাস্থ্য পরীক্ষার খরচ, ইনস্যুরেন্স–সংক্রান্ত খরচ, করোনা পরীক্ষার খরচ, কোয়ারেন্টিন–সংক্রান্ত খরচসহ সব ব্যয় মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তা বা কোম্পানি বহন করবে। নিয়োগকর্তা কর্মীর মানসম্মত আবাসন, বিমা, চিকিৎসা ও কল্যাণ নিশ্চিত করবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী ইমরান বলেন, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে বাংলাদেশ প্রান্তে কোনো ধরনের গ্রুপিং হতে দেবো না।
এখনই আর্থিক লেনদেন নয়
কর্মী পাঠানোয় মালয়েশিয়ার সঙ্গে এমওইউ সই হলেও এখনও অনেক আনুষ্ঠানিকতা বাকি রয়েছে। তাই মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা দেওয়ার আগে মালয়েশিয়া গমনেচ্ছুদের যে কোনো প্রকার আর্থিক লেনদের থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেছে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রী ইমরান বলেন, এটা খুব দুঃখজনক যে আর্থিক লেনদেনের কথা শুনছি। এখনও মার্কেট খোলে নাই। এমওইউ হয়েছে। গরীব মানুষের ওপর এখনই অত্যাচার। এটা ঠিক না। তাদেরকেও একটু সচেতন হতে অনুরোধ করব। দুই-একদিনের মধ্যে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে মন্ত্রণালয় থেকে।
মন্ত্রণালয়ের সচিব জানান, এখনও কিছু টেকনিক্যাল বিষয়ে আলাপ বাকি আছে। সব সুরাহা হওয়ার পর মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো শুরু হবে। সেই ঘোষণা মন্ত্রণালয় থেকেই দেওয়া হবে। তার আগে দালালের মাধ্যমে কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেন না করার অনুরোধ করছি সবাইকে।
দীর্ঘ তিন বছর বন্ধ থাকার পর গত শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে অনুমোদন দেয় মালয়েশিয়া। বাংলাদেশ থেকে সব পেশার শ্রমিক নেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে দেশটি। বিশেষ করে গৃহকর্মী, বাগান, কৃষি, উৎপাদন, পরিষেবা, খনি ও খনন এবং নির্মাণ খাতে বাংলাদেশি কর্মী নেবে দেশটি।
এনআই/আইএসএইচ