রাস্তায় চুরি হয়ে যায় ৩৫ শতাংশ পোশাক, পাচার হয় আফ্রিকাতেও
অ্যাপ্যারেলস লি. (এনভয় গ্রুপ) নামে একটি তৈরি পোশাক কোম্পানির রফতানির জন্য চট্টগ্রাম বন্দরে পাঠানো পোশাকের ৩০-৩৫ শতাংশ কাভার্ড ভ্যান থেকেই চুরি হয়ে যেত। এসব চুরি করা পোশাক আবার একটি চক্র আফ্রিকা, নেপালসহ দেশীয় মার্কেটেও বিক্রি করত।
চক্রটির সঙ্গে কিছু গাড়িচালক, অসাধু বায়ার ও সিঅ্যান্ডএফের ব্যক্তিরা জড়িত। সম্প্রতি চুরির বিষয়ে ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম থানায় এ বিষয়ে একটি মামলা হয়। পরে মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে ডিএমপির গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগ।
বিজ্ঞাপন
ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে চক্রটির পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিবি মতিঝিল। গ্রেফতাররা হলেন মো. সবুজ (৩০), মো. মোতাহার হোসেন (৩৮), মো. হানিফ (৩৭), মো. নজরুল ইসলাম (২০) ও মো.আবুল কাশেম (২১)।
রোববার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) একেএম হাফিজ আক্তার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
হাফিজ আক্তার বলেন, সম্প্রতি তৈরি পোশাক রফতানির জন্য ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে পাঠাচ্ছিল অ্যাপ্যারেলস লি. (এনভয় গ্রুপ) নামে একটি প্রতিষ্ঠান। তাদের ৫৩ হাজার পোশাক কাভার্ড ভ্যানের মাধ্যমে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পাঠানো হয়। কিন্তু সেটিতে চুরি হয়। কাভার্ড ভ্যান থেকে ৬০ লাখ টাকার পোশাক চুরি হওয়ার ঘটনায় ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা হয়। ওই ঘটনায় ডিবির গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগ ছায়া তদন্ত শুরু করে। অনুসন্ধানে একটি সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়। যারা প্রতিদিন রফতানিমুখী গার্মেন্টস পণ্যবাহী একাধিক কাভার্ড ভ্যানের ড্রাইভার ও গাড়ির মালিকের যোগসাজশে রাস্তা থেকে কৌশলে পণ্য চুরি করে।
তিনি বলেন, রফতানিমুখী গার্মেন্টস পণ্য ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে যাওয়ার পথে কৌশলে কাভার্ড ভ্যানের কার্টুন থেকে ৩০/৩ পণ্য চুরি করে পুনরায় কার্টুনগুলো হুবহু আগের মতো করে গাড়ি ছেড়ে দেয়। পরে গাড়ির চালক গাড়িটি নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে দেয়। বিদেশি ক্রেতারা পণ্য কম পাওয়ায় দেশের উৎপাদিত গার্মেন্টসকে দায়ী করে।
তিনি আরও বলেন, দেশের অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় অবদান রাখে গার্মেন্টস খাত। রফতানি আয়ের মূল খাত এই গার্মেন্টস ব্যবসার ওপর দেশের প্রায় ২ কোটি লোকের জীবিকা নির্ভর করে। সাম্প্রতিক সময়ে রফতানিমুখী গার্মেন্টস পণ্য চুরির ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্টের পাশাপাশি বিদেশি ক্রেতা হারাতে হচ্ছে। যা এ খাতকে চ্যালেঞ্জের মধ্য দিচ্ছে।
গ্রেফতারদের সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কিনা বা তারা কতদিন ধরে কী পরিমাণ কাপড় চুরি করেছে এ বিষয়ে অধিকতর তথ্য জানতে তাদেরকে রিমান্ডে নিয়ে আসতে আদালতে পাঠানো হবে। আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করলে তাদের অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও ডিবির প্রধান জানান।
এমএসি/ওএফ