‘আওয়ামী লীগ আছে বলেই প্রতিবাদ করতে পারি’
‘আমি যুদ্ধ দেখেছি। ইয়াহিয়া খান, টিক্কা খান এরা খুবই নিকৃষ্ট। এই জায়গায় (রায়ের বাজার বধ্যভূমি) তারা যা করেছে তা নজিরবিহীন। এখানে ইট ভাটা ছিল। যেখানে লাশের পর লাশ পড়ে ছিল। কথাসাহিত্যিক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারদের লাশ। কুকুর-শিয়াল কামড়ে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেয়েছে সেসব লাশ। এসব বীভৎস দৃশ্য আমি দেখেছি।’
কথাগুলো বলছিলেন গণজাগরণ মঞ্চের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন জালাল। সবার কাছে তিনি ‘বিচ্ছু জালাল’ নামেই পরিচিত।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) বিচ্ছু জালাল বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জানাতে রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে আসেন সেই পুরনো ঢঙে। কপালে বাংলাদেশের পতাকা বাঁধা। পরনেও পতাকার লাল-সবুজ রঙের জামা। তার মধ্যে বড় করে লেখা ‘৭১’। দুই হাত দিয়ে একটি প্ল্যাকার্ড তুলে ধরেছেন ওপরে। সেখানে লেখা- ‘আজ ও ভুলিনি ১৪-১২-১৯৭১, পাকিস্তানি ইয়াহিয়া শালা আবি তু কাহা গিয়া’।
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শুরু হওয়ার পর থেকে ঘুরেফিরে বারবার দেখা গেছে লাল-সবুজে সজ্জিত এই মানুষটিকে। কখনও আদালতের বারান্দায়, কখনও গণজাগরণ মঞ্চের সভা-সমাবেশ ও মিছিলে। আবার কখনও টেলিভিশনের পর্দায়।
বিচ্ছু জালাল ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি লালবাগে থাকতাম। বড় ভাইয়ের সঙ্গে রায়ের বাজার এসে এই বীভৎস ঘটনা দেখেছি। এখনও চোখের সামনে ভাসে সেসব দৃশ্য। তাই প্রতি বছর এই জায়গায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে আসি।
তিনি বলেন, পাকিস্তানিদের কোনো কিছুই আমার ভালো লাগে না। পাকিস্তান দলকে (পাকিস্তান ক্রিকেট দল) তো সাপোর্ট করিই না, ওদের নাম শুনলেও গা শিউরে ওঠে।
আওয়ামী লীগকে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বাংলাদেশবিরোধীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা যায়। বিএনপি-জামায়াত যখন ক্ষমতায় থাকে তখন প্রতিবাদ করতে পারি না। এর আগেও প্রতিবাদ করতে গিয়ে মার খেয়েছি অনেক।
পাকিস্তানের বন্ধু রাজাকাররা এখনও ওঁত পেতে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা বাংলাদেশ সরকারকে উৎখাত করতে চায়। তাই এ বিষয়ে সরকারকে সচেতন থাকতে হবে। রাজাকারদের ফাঁসি হয়েছে, তাতে কি! তাদের আত্মীয়-স্বজন তো আছে। তারাও এদেশের ভালো চায় না।
গণজাগরণ মঞ্চের এই সদস্য বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমি তার দীর্ঘায়ু কামনা করি। তবে দেশকে এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রীর বেঁচে থাকা জরুরি। তাই রাস্তা-ঘাট, বিমানবন্দর অর্থাৎ খোলা মাঠে অভ্যর্থনার বিপক্ষে তিনি।
এএজে/এমএইচএস