ব্যাংক লেনদেনের ক্ষেত্রে মিথ্যা তথ্য দিলে অনধিক ৩ বছরের কারাদণ্ড, ৫০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয়দণ্ডের বিধান রেখে ‘পেমেন্ট অ্যান্ড সেটেলম্যান্ট সিস্টেমস আইন ২০২১’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। 

সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। ভিডিও কনফারেন্সে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ও সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা বৈঠকে যোগ দেন।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘যেসব পেমেন্ট এবং সেটেলম্যান্ট ব্যাংকে হচ্ছে, সেখানে কোনো আইন ছিল না। কিছু রেগুলেশন দিয়ে পরিচালিত হতো। বর্তমান অবস্থায় ডিজিটাল লেনদেন হওয়ার কারণে এ আইন নিয়ে আসা হয়েছে।’

খসড়া আইনে ৪৭টি ধারা রয়েছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তবে ক্রিপ্টো-কারেন্সি বা ভার্চুয়াল মুদ্রা এ খসড়া আইনে যুক্ত করা হয়নি বলেও জানান তিনি।

 

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘ক্রিপ্টো-কারেন্সি এটার মধ্যে ইনভলভ না। ওটা কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অনুমোদিত কোনো ট্রানজেকশন না। ডিজিটাল ব্যাংকিং ডাজ নট মিন ক্রিপ্টো-কারেন্সি, এটা খেয়াল রাখতে হবে।’ 

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘খসড়া আইনের ৩৮ নম্বর ধারায় যারা বিভিন্ন রকমের অপরাধ করবে, তাদেরকে শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। আর ৩৯ ধারাতে ব্যাংক, কোম্পানির মাধ্যমে গৃহীত বা সংগঠিত অপরাধের ক্ষেত্রে এ কোম্পানির মালিক, পরিচালক, কোম্পানির প্রধান নির্বাহী, ব্যবস্থাপক, সচিব বা অন্য কোন কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা থাকলে তাদেরকে পদ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অপসারণের বিধান রাখা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘খসড়া আইনে কিছু বিশেষ বিধান রাখা হয়েছে। কীভাবে লেনদেন হবে, পরিশোধ হবে, পরিচালনা হবে এবং সেবা কীভাবে দেওয়া হবে, সেগুলো ৪ এবং ৫ নম্বর ধারায় ম্যানশন করা হয়েছে। ৪ ধারার বিধান লঙ্ঘন করলে তাকে ৫ বছরের কারাদণ্ড এবং অনধিক ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দিতে পারবে।’

‘ধরুন কাউকে কোনো কারণে সাসপেন্ড করা হল, তুমি লেনদেন করতে পারবে না কিন্তু সে যদি আদেশ ভঙ্গ করে লেনদেন করে তাহলে তাকে এ শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। এটাই সর্বোচ্চ শাস্তি।’ 

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘মিথ্যা তথ্য বা দলিল বা বিবৃতি দিলে অনধিক ৩ বছরের কারাদণ্ড, অনধিক ৫০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয়দণ্ড হতে পারে। গ্রাহকের স্বার্থ সংরক্ষণে ফি আরোপ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকে ক্ষমতা ও দায়িত্ব প্রিসাইজ করে দেওয়া হয়েছে। খসড়া আইনটি নগদ, বিকাশসহ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।’

খসড়া আইনটি কেনো করা হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পেমেন্টের যে ব্যবস্থাপনা, সে বিষয়ে কোনো আইন ছিল না। কিছু রেগুলেশনের আন্ডারে করা হতো। এখন দেখা যাচ্ছে যে, এটা ডিজিটাল হয়ে যাচ্ছে। এগুলো বিধিবিধানগুলোর মধ্যে ছিল না। সেজন্য পুরো পদ্ধতিগুলোকে আলাদা করে আইনে আনা হয়েছে।’

এসএইচআর/আইএসএইচ