দারাজসহ ১৩ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত হচ্ছে
১৩টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতারণামূলক নানা অফার দিয়ে বাজারে প্রতিযোগিতার পরিবেশ নষ্ট করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এ তালিকায় রয়েছে দারাজ অনলাইন শপিং, আলেশা মার্ট, সিরাজগঞ্জ শপ, কিউকম ডটকম, ধামাকা, আলাদিনের প্রদীপ, আনন্দের বাজার, ফাল্গুনি শপ ডটকম, ই-অরেঞ্জ, আদিয়ান মার্ট, থলে, দালাল প্লাস এবং ২৪ কেটি.কম।
বিজ্ঞাপন
প্রতিযোগিতা কমিশন জানায়, প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতারণামূলক নানা অফার দিয়ে বাজারের পরিবেশ নষ্ট করছে। আর পরিবেশ নষ্ট করা প্রতিযোগিতা কমিশন আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ। এ কারণে প্রতিষ্ঠানটি স্ব-প্রণোদিত হয়ে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগগুলো তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে সত্যতা পেলেই ব্যবস্থা নেবে কমিশন।
প্রতিযোগিতা কমিশন আরও জানায়, নিজেদের ফেসবুক পেজ ও গণমাধ্যমে মাত্র ‘এক টাকায় গাড়ি’ মিলবে এমন প্রলোভন দিচ্ছে দারাজ। একইভাবে বাজার মূল্যের চেয়ে ৩৫ শতাংশ কমে মোটরসাইকেল বিক্রির অফার দিয়েছে আলেশা মার্ট। এই দুটি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন অফারের মাধ্যমে বাজারে প্রতিযোগিতার পরিবেশ নষ্ট করছে। যা দণ্ডনীয় অপরাধ।
আনন্দের বাজার, দালাল প্লাস এবং থলে প্রতিষ্ঠান তিনটি ক্রেতাদের প্রলুব্ধ করতে মোটরবাইক ও ইলেকট্রনিক্স পণ্যে ২০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বিশেষ ছাড়ের অফার দেয়। তারা বলে, অগ্রিম দাম পরিশোধের পর ২০ থেকে ৪০ কর্মদিবসের মধ্যে পণ্য ডেলিভারির দেওয়া হবে। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের এ ধরনের অফার বাজারে প্রতিযোগিতা নষ্ট করছে।
তাই কোম্পানিগুলো বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে প্রাথমিকভাবে তদন্তের কাজ করা হয়েছে। তদন্তে অপরাধ প্রমাণ হলে প্রাথমিকভাবে কমিশন প্রতিষ্ঠানগুলোকে শুনানিতে ডাকাবে। শুনানিতে সঠিক জবাব না দিতে পারলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোর টার্নওভারের ১ থেকে থেকে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত অর্থদণ্ডের শাস্তি রয়েছে।
এদিকে ১৩টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ধামাকা শপিং এবং সিরাজগঞ্জ শপের সদস্য বাতিল করেছে ই-ক্যাব। তারা নির্দিষ্ট সময়ে ক্রেতাদের পণ্য বা মূল্য ফেরত দেয়নি। পাওনা পরিশোধে দৃশ্যমান পদক্ষেপও নেয়নি। এছাড়াও আলাদিনের প্রদীপ, কিউকম ডটকম, আদিয়ান মাট এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করেছে প্রতিযোগিতা কমিশন।
জানা গেছে, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন দুভাবে অভিযোগ আমলে নেয়। এক হচ্ছে বাইরে থেকে কোনো সাধারণ ব্যক্তি অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, প্রয়োজন মনে করলে কমিশন নিজেই স্ব-প্রণোদিত হয়ে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ে করে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান মো. মজিবুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, আইন অনুযায়ী একই পণ্য এক কোম্পানি অন্য কোম্পানির চেয়ে অনেক বেশি দামে বিক্রি করতে পারে না। এতে বাজারে প্রতিযোগিতার পরিবেশ নষ্ট হবে। দারাজ অনলাইন শপিং এক টাকায় গাড়ি মিলবে এই বিজ্ঞাপন দিয়েছে। দারাজের মতো অন্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানও বাজারে পরিবেশ নষ্ট করছে এমন ধারণা থেকে কমিশন নিজেই অভিযোগ দায়ের করেছে। এখন এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে পরবর্তী প্রক্রিয়া শেষ করে বিচারের আওতায় আনা হবে।
এমআই/এসকেডি