চোরের ৪০ বার শেষে দিন এলো পুলিশের
চট্টগ্রামে আন্তঃজেলা চোরচক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে চোর চক্রটি মোবাইল, ল্যাপটপসহ মূল্যবান সামগ্রী চট্টগ্রাম নগরী থেকে চুরি করা শেষে গ্রেফতার এড়াতে দ্রুত কক্সবাজার জেলার চকরিয়া ও পেকুয়া থানা এলাকায় চলে যায়।
২০২০ সাল থেকে এ পর্যন্ত চক্রটি ৪০ বার চট্টগ্রাম নগরে চুরি করেছে। আর প্রত্যেকবারই চুরি করে কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়া এলাকায় চলে গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বিজ্ঞাপন
আজ রোববার (১২ ডিসেম্বর) তাদেরকে গ্রেফতার ও চুরি করা একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে। ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
গ্রেফতাররা হলেন তৌহিদুল ইসলাম (১৮), মো. ছোটন মিয়া (১৮) ও সাইফুল ইসলাম (২৬)। তারা সবাই কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বাসিন্দা।
পুলিশ কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, আসামিরা আন্তঃজেলা চোরচক্রের সদস্য। তারা চুরি করে থাকে নির্দিষ্ট সময়ে। এছাড়া চুরি করতে কৌশল অবলম্বন করে থাকে। চক্রটি চুরির উদ্দেশ্যে চকরিয়া থেকে গভীর রাত ১টা থেকে দেড়টার মধ্যে বাসযোগে ভোর ৫টার মধ্যে চট্টগ্রাম শহরে এসে পৌঁছায়। এরপর বিভিন্ন অভিজাত এলাকার বাসা বাড়িতে মানুষের চলাচল নজরদারি করতে থাকে। ফজরের নামাজের সময় কেউ মসজিদে নামাজ পড়তে গেলে, সকাল বেলা হাঁটতে গেলে অথবা গৃহকর্মী সকালে রুমের দরজা খুলে রাখলে সেই সুযোগে কৌশলে বাসায় প্রবেশ করে ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, হাতঘড়ির মতো মূল্যবান সামগ্রী চুরি করে নিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, চুরি শেষে দ্রুত চট্টগ্রাম নগরী ত্যাগ করে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া ও পেকুয়া থানা এলাকায় চলে যায়। পরে চুরি করা বিভিন্ন সামগ্রী অসচেতন ক্রেতাদের নিকট বিক্রয় করিয়া দেয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কুইন্স লাইন ইউনিভার্সিটি অ্যান্ড টেকনোলজি ব্রিজম্যান, অস্ট্রেলিয়ার ভিজিটিং রিসার্স ফেলো ড. মো. মাহবুবুর রহমান কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে মিলে একটি স্মার্ট অ্যানার্জি সিস্টেম প্রজেক্ট তৈরি করেন, যা ড. মাহবুবুর রহমানের ল্যাপটপে সংরক্ষিত ছিল। কিন্তু গত ৯ ডিসেম্বর সকাল ৬টা ১৫ মিনিট থেকে সকাল নয়টার মধ্যে যেকোনো সময় চক্রটি মাহবুবুর রহমানের ল্যাপলটপটি চুরি করে নিয়ে যায়। যা সিসিটিভি ফুটেজে সামান্য দেখা যায়। পরে ড. মাহবুবুর রহমান বায়েজিদ বোস্তামী থানায় মামলা দায়ের করেন।
পরে পুলিশ সিসটিভি ফুটেজেপ্রাপ্ত চোরদের শনাক্তের লক্ষ্যে অভিযান পরিচালনা করে এবং সিএমপি ফেসবুক পেজে ফুটেজটি শেয়ার করে। এরপর ১১ ডিসেম্বর একই কায়দার হালিশহর এলাকায় চুরি করতে গিয়ে জনগণের হাতে আটক হন আসামি তৌহিদুল ইসলাম ও ছোটন মিয়া। পরে হালিশহর থানা পুলিশ তাদেরকে আটক করে ফেসবুক পেজে দৃশ্যমান চোরদের চেহারার সঙ্গে মিল পাওয়ায় বায়েজিদ বোস্তামী থানাকে অবহিত করে। পরে পুলিশ হালিশহর থানায় গিয়ে আটক দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এ সময় তারা মাহবুবুর রহমানের ল্যাপটপটি চুরির কথা স্বীকার করে। সেই সাথে ল্যাপটপটি কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানা এলাকার সাইফুল ইসলামের কাছে আছে বলে জানায়।
উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে বায়েজিদ থানা পুলিশ মামলার বাদী ড. মাহবুবুর রহমানকে নিয়ে আজ সকালে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া ও পেকুয়া থানার মাঝামাঝি দুর্গম এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। এ সময় তার কাছে থেকে ড. মাহাবুবের ল্যাপটপটি উদ্ধার করা হয়।
কেএম/এইচকে