স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি সম্মাননা পেলেন সাত কর্মী
দেশের জনগণকে পরিপূর্ণ স্বাস্থ্য সেবার আওতায় আনতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি (এসএসকে) নামক স্বাস্থ্য বীমা চালু করেছে সরকার। কর্মসূচিটির পরীক্ষামূলক কার্যক্রম হিসেবে টাঙ্গাইল জেলার তিনটি উপজেলায় পাইলট প্রকল্প চলমান রয়েছে। ছয় বছর ধরে চলমান এই প্রকল্পে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে যারা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন তাদের মধ্যে সাতজনকে বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট।
রোববার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা দিবস ২০২১ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ সম্মাননা দেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
যারা সম্মাননা পেয়েছেন, টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাইফুর রহমান খান, স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের এসএসকে সেলের ফোকাল পার্সন ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. উম্মে রুমান সিদ্দিকী, টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম খোকন,
টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার সৈয়দা শামীমা, টাঙ্গাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স আরিফা খাতুন, ঘাটাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সহায়ক মো. আব্দুল হালিম।
গত ছয় বছর ধরে দেশের তিনটি উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি (এসএসকে) নামে স্বাস্থ্য বীমা চালু করেছে সরকার। ২০১৬ সালের মার্চে টাঙ্গাইলের কালিহাতী এবং ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে মধুপুর ও ঘাটাইল উপজেলায় এ কার্যক্রম শুরু হয়। উপজেলায় প্রায় ৮২ হাজার দরিদ্র পরিবারকে একটি করে স্বাস্থ্য কার্ড দেওয়া হয়। এ কার্ড দেখানোর মাধ্যমে এ পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে ভর্তি, ৭৮টি রোগের পরীক্ষা, ওষুধ ও বিনামূল্যে পূর্ণ চিকিৎসা পাচ্ছেন। পাশাপাশি পরিবারপ্রতি ১ হাজার টাকা প্রিমিয়ামও দিচ্ছে সরকার। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি পরিবার বছরে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা সুবিধা পাবে।
পরীক্ষামূলক এ কর্মসূচিতে কোনো সমস্যা দেখা দিচ্ছে কিনা বা সমস্যার প্রকৃতি নির্ধারণে একটি পর্যালোচনা জরিপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি) ও আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)। এ জরিপে তিন উপজেলার ৭০টি গ্রামের কার্ডধারী সাত হাজারের বেশি পরিবারের তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এতে দেখা যায়, বাংলাদেশে দারিদ্র্যসীমার যে মানদণ্ড তার উপরে অবস্থান করছে ৪২ শতাংশ কার্ডধারী পরিবার। এর মধ্যে কালিহাতীতে ৪৪
শতাংশ পরিবার, ঘাটাইলে ৪৯ শতাংশ ও মধুপুরে ৩৭ শতাংশ পরিবারের অবস্থান দারিদ্র্যসীমার উপরে। ফলে সঠিক নিৰ্ণায়ক মেনে দরিদ্র পরিবারের তালিকা তৈরি করা হয়নি বলে জরিপে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় প্রভাবশালী মহল স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচিতে দরিদ্র পরিবার বাছাইয়ে প্রভাব
রেখেছে বলেও সেখানে উঠে আসে। এদিকে কার্ডধারী ৪৫ শতাংশ পরিবার এর ব্যবহার জানে না বলেও দেখা গেছে।
এ কর্মসূচি মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের জন্য শুরুতেই স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়ে একটি উপজেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়।
টিআই/আইএসএইচ