নিরাপদ সড়ক আন্দোলন
দাবি না মানলে নতুন বছরে দুর্বার আন্দোলন
নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতসহ ১১ দফা দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে নতুন বছরে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেল ৫ টায় রামপুরা ব্রিজের সংলগ্ন সড়কে মানববন্ধনে এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া খিলগাঁও মডেল কলেজের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিয়া বলেন, আমরা এ ডিসেম্বরে পুরো মাসটা সরকারকে সময় দিতে চাই। এর মধ্যে আমাদের ১১দফা দাবি যদি বাস্তবায়ন না হয়, তাহলে আমরা নতুন বছরে আবার নতুন করে আন্দোলনে নামব। এছাড়া এরই মধ্যে ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য জনমত যাচাই করব ও অভিভাবকদের কাছে যাব, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের স্বাক্ষর গ্রহণ করা হবে।
বিজ্ঞাপন
শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, এ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে আমি একাত্মতা প্রকাশ করেছি। শিক্ষার্থীদের এ ১১ দফা দাবি শুধু তাদের নয়, ১৬ কোটি মানুষের। প্রতিদিন যেভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ নিহত হচ্ছে। কেউ দাবি করতে পারবে না যে আমি রাস্তায় বের হয়ে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারব। শুধু ধনীরা ছাড়া।
তিনি বলেন, দুর্ঘটনা কেন হয়, আমরা সবাই জানি সরকারও জানে। ২০১৮ সালের শিক্ষার্থীদের ঐতিহাসিক আন্দোলনের সময় সরকার কিছু নির্দেশনা দিয়েছিল। শুধু চালক ও হেলপারের কারণে এ দুর্ঘটনা হয় না। এখানে অনেকগুলো কারণ আছে। সেটার কারণ হচ্ছে সড়ক ব্যবস্থাপনায় ভয়ংকর অনিয়ম ও দুর্নীতি।
তিনি আরও বলেন, বাসের চালক ও হেলপারদের নির্দিষ্ট কর্ম-ঘণ্টা নেই। তাদের কোনো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই। নানা সমস্যায় জর্জরিত বাসে ফিটনেস নেই, চালকের লাইসেন্স নেই। এই কারণে যখন বাসগুলো সড়কের চলে তখন মনে হয় মৃত্যুর দূত চলছে।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে ঢাকা জেলা ট্যাক্সি, ট্যাক্সি কার অটো টেম্পো ও অটোরিকশার চালক শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে আমরা ও একাত্মতা প্রকাশ করেছি। কারণ এই আন্দোলনে আমাদের কথা তারা তুলে ধরেছে। তাদের সঙ্গে আমাদেরও আরও কিছু দাবি আছে।
সেগুলো হলো :
# চালকদের লাইসেন্স পেতে হলে কোনো ঘুষ ও দালালদের শরণাপন্ন যেন না হতে হয়।
# একটি যানবাহনের ইনস্যুরেন্স থাকলেও চালকদের কোনো জীবন বিমা নেই। চালকদেরও জীবন বিমা চালু করতে হবে।
# চালকদের কর্ম-ঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে ও পরিবহন শ্রমিকদের সন্তানদের স্কুলের বেতন হাফ করতে হবে। এছাড়া তিনি আরও ছয়টি দাবি জানান।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ২০১৮ সালের ঐতিহাসিক শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অনেকগুলো নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেগুলোর কোনো বাস্তবায়ন হয়নি। এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় সড়কে হত্যা ও নৈরাজ্য বন্ধ হচ্ছে না।
এমএসি/এসকেডি