আলমগীর হোসেন

খুনের মামলার আসামি শ্যালককে বেড়ানোর কথা বলে নিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করলেন ভগ্নিগতি। পুলিশ জানায়, ঢাকায় খুন করে চট্টগ্রামে বোনের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন আলমগীর হোসেন (৩৩)। কিন্তু শ্যালকের খুনে সংশ্লিষ্টতার কথা শুনে থানায় নিয়ে তাকে সোপর্দ করেন ভগ্নিপতি আশরাফুল ইসলাম বাবু। পরে তাকে গ্রেফতার করে খুলশী থানা পুলিশ। 

বুধবার সকালে চট্টগ্রামের খুলশী থানায় এ ঘটনা ঘটে। ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা। তিনি বলেন, গত ৩ ডিসেম্বর রাতে ঢাকার সবুজবাগ থানার মান্ডা খালের ধারে মোকলেছ মুন্সীর ছেলে জহির মুন্সী (২৭) এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে খুন হন। এ ঘটনায় সবুজবাগ থানায় আলমগীর ও আরেকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এরপর আলমগীর গাইবান্ধা চলে যান। এরপর সেখান থেকে পালিয়ে বোন গার্মেন্টেসকর্মী জান্নাতের বাসায় নগরীর টাইগার পাস এলাকায় এসে আশ্রয় নেন। 

খুনের বিষয়টি জানতে পেরে বোনের স্বামী আশরাফুল তাকে থানায় সোপর্দ করার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী বুধবার সকালে শ্যালক আলমগীরকে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে সিএনজিতে তোলেন। এরপর সোজা সিএনজিসহ খুলশী থানায় চলে আসেন। থানায় প্রবেশ করেই আশরাফুল চিৎকার করে শ্যালককে দেখিয়ে বলেন, ‘সে একটা খুনি। সে মার্ডার করেছে। তাকে গ্রেফতার করেন।’

ওসি বলেন, পরে আমরা মার্ডার সম্পর্কে খোঁজ নিলাম। খোঁজ নিয়ে আমরা ঢাকার সবুজবাগ থানার ওসির সঙ্গে কথা বলছি। সেখানে ছবি পাঠিয়েছি। এরপর তারা নিশ্চিত করে যে, আলমগীর সবুজবাগ থানার জহির মুন্সী হত্যা মামলার আসামি। গ্রেফতার আলমগীরকে সবুজবাগ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি সন্তোষ চাকমা।

গ্রেফতার আলমগীর হোসেনের (৩৩) বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায়। ঢাকার সবুজবাগের হক সোসাইটি আবাসিক এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। 

পুলিশের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, আলমগীরের শ্যালক নাজমুল সবুজবাগ এলাকার মো. মোকলেছ মুন্সীর বাসায় সাবলেটে ভাড়া থাকতেন। মোকলেছের কাছ থেকে সাত হাজার টাকা ধার নেন নাজমুল। পরে ঋণ পরিশোধ না করে বাসা ছেড়ে চলে যান।

এরপর মোকলেছের ছেলে জহির মুন্সী নাজমুলের কাছে কয়েকবার পাওনা টাকা চান। এতে নাজমুলের ক্ষোভ তৈরি হয় জহির মুন্সীর ওপর। এরপর নাজমুল ও আলমগীর মিলে জহির মুন্সীকে খুনের পরিকল্পনা করেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামিরা ৩ ডিসেম্বর জহির মুন্সীকে টাকা দেওয়ার কথা বলে সবুজবাগ মান্ডা খালের ধারে নিয়ে যান। সেখানে আসামিরা তাকে ছুরিকাঘাত করেন। এতে তার মৃত্যু হয়।

হত্যার পর পালানোর সময় স্থানীয়রা নাজমুলকে পুলিশে সোপর্দ করে। এরপর থেকে আলমগীর পালিয়ে ছিলেন। এ ঘটনায় দুইজনকে আসামি করে সবুজবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন মোকলেছ মুন্সী। সেই মামলায় গ্রেফতার হলেন আশরাফুলের শ্যালক আলমগীর। 

কেএম/আরএইচ