রুম সাজানো শেষ হওয়ার একদিন আগেই পদত্যাগ
১০ দিন আগে শুরু হয়েছিল তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর দফতর পুনরায় সাজানোর কাজ। করা হচ্ছিল নতুনভাবে ডেকোরেশন। কাজ শেষ হতে মাত্র একদিন বাকি। তার আগেই আজ পদত্যাগ করতে হলো প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে।
বিতর্কিত মন্তব্যের পর সমালোচনার মুখে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে নিজ দফতরে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন ডা. মুরাদ।
বিজ্ঞাপন
তার দফতরে গিয়ে দেখা যায়, নতুনভাবে সাজানো হচ্ছে সবকিছু। কাজ প্রায় শেষের দিকে।
ডেকোরেশনের কাজ করা একজন শ্রমিক ঢাকা পোস্টকে বলেন, ১০/১২ দিন আগে রুমটি নতুনভাবে ডেকোরেশন করার কাজ শুরু হয়েছিল। কালকের (বুধবার) মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে যাবে।
মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, কয়েকদিন আগেও রুমটি পরিদর্শন করার সময় যারা কাজ করছিলেন তাদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘সুন্দরভাবে কাজটি কর, আর কতদিন থাকি না থাকি জানি না।’
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর মঙ্গলবার মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান। বর্তমানে পত্রটি মন্ত্রণালয়ের সচিবের দফতরে রয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, এখনও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দেওয়া হয়নি। ই-মেইলে তিনি (ডা. মুরাদ হাসান) এ পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন।
জানা গেছে, পদত্যাগপত্রটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। অথবা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠানো হবে।
এর আগে নারীদের নিয়ে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেওয়ায় মুরাদকে মঙ্গলবারের মধ্যে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার রাত ৮টার দিকে প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে এ বার্তা পৌঁছে দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বেশ কয়েকদিন ধরেই বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে আলোচনায়-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ডা. মুরাদ হাসান। বিশেষ করে রাষ্ট্রধর্ম, রাজনীতি, খালেদা জিয়ার নাতনি ও সবশেষ ফোনালাপ ফাঁস নিয়ে ভেতর-বাইরে আলোচনা-সমালোচনায় ছিলেন। তার উল্টাপাল্টা মন্তব্য এবং অস্বাভাবিক আচরণের কারণে দলীয় সহকর্মীদেরও বিব্রত হতে হয়েছে।
এসবের জেরে সোমবার রাতে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ও জামালপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসানকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এদিকে মুরাদ হাসানকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের বিষয়ে আগামী কার্যনির্বাহী সভায় সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।
সংশ্লিষ্টদের মতে, দল থেকে বহিষ্কার হলে তাকে সংসদ সদস্যপদও হারাতে হতে পারে।
মুরাদ হাসান পেশায় চিকিৎসক ও আওয়ামী লীগপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ও একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য।
ডা. মো. মুরাদ হাসান একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালেও তিনি একই আসনে থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৯ সালে সরকার গঠনের সময় মুরাদ হাসানকে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে ৫ মাসের মাথায় ওই বছরের ১৯ মে তার দফতর পরিবর্তন করে তথ্য প্রতিমন্ত্রী করা হয়।
এসএইচআর/এসএসএইচ