ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে দুই দিন ধরে বৃষ্টির কবলে রাজধানী। টানা বৃষ্টির কারণে বাস, অটোরিকশাসহ অন্যান্য গণপরিবহনের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে গন্তব্যে যেতে যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। অনেকে বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও রিকশায় চড়ে স্বল্প দূরত্বের গন্তব্যে যাচ্ছেন।

সোমবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে মতিঝিল, মিরপুর-১০, কাকরাইল, পল্টন, শান্তিনগর, শ্যামলী, শাহবাগ, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, আজিমপুর, নিউমার্কেট, নীলক্ষেতসহ বিভিন্ন এলাকায় গণপরিবহন সংকটের এই দৃশ্য দেখা গেছে। চলমান এইচএসসি পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরাও এই দুর্ভোগে পড়েছেন।

রাজধানীতে সাধারণ সময়ে প্রায় ছয় হাজার বাস ও মিনিবাস চলাচল করে। বাসস্ট্যান্ডগুলোতে গাড়ির জটলা থাকলেও বৃষ্টির কারণে এদিন সকাল থেকে সড়কে বাস ও মিনিবাস কম চলাচল করতে দেখা গেছে। বরং উল্টো বেশ খানিক সময় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকেও কাঙ্ক্ষিত পরিবহন পাচ্ছেন না যাত্রীরা। 

ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সহ-সভাপতি আবুল কালাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে নগর পরিবহনের অর্ধেক বাস ও মিনিবাস রাস্তায় নামেনি। বিভিন্ন রাস্তায় পানি জমে থাকায় এসব পরিবহন নির্দিষ্ট গতিসীমায় চলতে পারছে না। মহাখালী-আব্দুল্লাহপুর সড়কেও সকালে তীব্র যানজট ছিল। বৃষ্টিতে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে গেছে। এজন্য আমরা গাড়ি চালকদের সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালানোর নির্দেশনা দিয়েছি। রাস্তায় আজ যাত্রীও কম বলে দাবি করেন তিনি।

মিরপুর-১২ নম্বর ডিওএইচ এর বাসা থেকে সকাল ৮টায় বের হয়ে চিড়িয়াখানা রোডে যেতে এক ঘণ্টা লেগেছে বলে জানান নুর নবী শিমু। তিনি তার ছেলে এইচএসসি পরীক্ষার্থী তাহসীন আহমেদকে নিয়ে কমার্স কলেজ কেন্দ্রে প্রাইভেটকারে পৌঁছান যানজট ঠেলে।   

মিরপুর-১ নম্বরে মূল সড়কে স্থানে স্থানে যাত্রীরা বাস ও অটোরিকশার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। যাত্রী দবিরুল ইসলাম জানান, মিরপুর-১ নম্বর সেকশনে প্রায় দেড় ঘণ্টা অপেক্ষার পর শ্যামলী যাওয়ার জন্য অটোরিকশা পাই, ভাড়া দিতে হয় ২৫০ টাকা। যা অন্যান্য দিনের চেয়ে দ্বিগুণ।

তিনি জানান, অ্যাপভিত্তিক পরিবহন সেবা উবার ও পাঠাওয়ের গাড়িও কল করে পাওয়া যায়নি।

এদিকে দুপুর গড়াতেই কোনো কোনো রুটে বাস সংকট যেন আরো বেড়েছে। দীর্ঘ সময় পর গন্তব্যের বাস পেলেও তাতে দাঁড়িয়ে রওনা হতে হচ্ছে যাত্রীদের। আর এ সুযোগে যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন অনেকেই।

রাজধানীতে সকাল থেকেই কর্মজীবী ও শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন যাত্রীকেই ছাতা মাথায় বা রেইনকোট পরে গন্তব্যে ছুটতে দেখা গেছে। মিরপুরের ৬০ ফিট সড়কে লেগুনার সংকট ছিল উল্লেখ করে যাত্রী স্বরূপ রায় বলেন, বেলা ১২টা থেকে এক ঘণ্টা দাঁড়িয়েও লেগুনা পেলাম না।  

ঘূর্ণিঝড়ের সবশেষ আপডেট

উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপ আকারে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূলীয় এলাকায় অবস্থান করছে।  এটি উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে ধীরে ধীরে শক্তি হারাতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে। এর প্রভাবে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ভারী থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। দেশের সব সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রয়েছে।

পিএসডি/জেডএস