২৫ ভাগ কাজ করেই ৮০ শতাংশ বিল আত্মসাৎ
পৌরসভার পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পের ১৬ কিলোমিটার পাইপ স্থাপনের কথা থাকলেও মাত্র ৪ কিলোমিটার স্থাপন করেই পুরো প্রকল্পের প্রায় ৮০ ভাগ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।
অর্থাৎ ২৫ ভাগ কাজ করেই জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী ও ঠিকাদারসহ একটি সিন্ডিকেট লুটপাট করেছে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকার বেশি। ইতোমধ্যে কাজের নির্ধারিত সময়ও পেরিয়ে গেছে। কিন্তু ৭৫ ভাগ কাজই বাকি রয়ে গেছে।
বিজ্ঞাপন
কুষ্টিয়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের আওতাধীন প্রকল্পের এমন লুটপাটের অভিযোগের তীর নির্বাহী প্রকৌশলী ইব্রাহীম মো. তৈবুর রহমান, এস্টিমেটর সুমন ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মনির ট্রেডার্সসহ একটি সিন্ডিকেটের দিকে।
রোববার (৫ নভেম্বর) দুদকের কুষ্টিয়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নীল কমল পালের নেতৃত্বে অভিযানেও মিলেছে এমন অভিযোগের সত্যতা।
অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) শফি উল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, কুষ্টিয়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে পৌরসভা প্রকল্পের ১৬ কিলোমিটার পাইপ লাইনের মধ্যে ৪ কিলোমিটার পাইপ লাইন স্থাপন করে প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করা হয়। দুদক টিম সরেজমিনে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে ও সংশ্লিষ্ট নথিপত্র সংগ্রহ করে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
অভিযানের বিষয়ে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও মানববর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ এনভায়রনমেন্টাল স্যানিটেশন প্রকল্পের আওতায় কুষ্টিয়া জেলার খোকসা উপজেলায় রোড মেরামতসহ পানি সরবরাহের ১৫.৮৩ কিলোমিটার পাইপ লাইন নির্মাণ বাবদ ২ কোটি ২৬ লাখ ৮১ হাজার ৭৮৪ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ইজিপি সিস্টেমে উক্ত কাজের জন্য মেসার্স মনির ট্রেডার্সের মালিক মো. কামরুজ্জামান সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে নির্বাচিত হয়। ২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর প্রতিষ্ঠানটিকে ১০ শতাংশ কমে ২ কোটি ৪ লাখ ১৩ হাজার ৬০৫ টাকায় কার্যাদেশ দেওয়া হয়। যেখানে সময়সীমা ১০ মাস হিসেবে ২০২০ সালের ২৭ আগস্ট তারিখের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন করার নিয়ম থাকলেও কাজটি এখনও সম্পন্ন হয়নি। অন্যদিকে কাজ বর্ধিত করণের কোনো আবেদন বা সময় বৃদ্ধির কোনো অনুমোদন নেওয়া হয়নি। অথচ ইতোমধ্যে কাজের ১ম, ২য় ও ৩য় আংশিক বিল বাবদ মোট ১ কোটি ৮০ লাখ ৮৪ হাজার ৬৮০ টাকার বিল ঠিকাদারকে দেওয়া হয়েছে।
অভিযানকালে আরও জানা যায়, ঠিকাদার কাজের সাইট বুঝে নেওয়ার সময়ে তাকে প্রকল্পের পূর্ণ ড্রয়িং ডিজাইন সরবরাহ না করে আংশিক ড্রয়িং ডিজাইন সরবরাহ করা হয়। কাজ চলমান থাকাকালে পুনরায় রিভাইসড ড্রয়িং ডিজাইন সরবরাহ করা হয়। উক্ত প্রকল্পের ১৫.৮৩ কিলোমিটার পাইপ লাইন বসানো হয়েছে কিনা এবং সিডিউল ও প্রাক্কলন অনুযায়ী পাইপলাইন সমূহের গুনগত মান ও পরিমাণ সঠিক আছে কিনা তার সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র যাচাই করে পূর্নাঙ্গ প্রতিবেদন তৈরি করবে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম।
আরএম/আইএসএইচ