শান্তি প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের আন্তর্জাতিকীকরণে ঢাকায় দুদিনের বিশ্ব শান্তি সম্মেলনে ‘ঢাকা শান্তি ঘোষণা’ গৃহীত হয়েছে। এ ঘোষণায় ১৬ দফা গৃহীত হয়েছে। রোববার (৫ ডিসেম্বর) শান্তির সম্মেলনের সমাপনীতে ঢাকা শান্তি ঘোষণা গৃহীত হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, গৃহীত ঘোষণায় বলা হয়েছে, সামাজিক অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে শান্তিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া তথা সম্মেলনের থিমকে ধারণ করা। এতে উঠে আসে শান্তি নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা। মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে এ সম্মেলনের মাধ্যমে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বিশ্বকে আরও জানানোর প্রয়াস পাওয়া গেছে। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক উত্তরসূরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে প্রদর্শিত সক্ষম নেতৃত্বে বাংলাদেশ উত্তরাধিকারকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। জাতিসংঘে তার শান্তির সংস্কৃতি দর্শন নেওয়া হয়েছে। 

ঘোষণায় বলা হয়েছে, ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতাকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য নিজেদেরকে অঙ্গীকারবদ্ধ করি। মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষার অবিচল প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছি। আমরা সন্ত্রাসবাদের নিন্দা জানিয়ে আন্তর্জাতিক নিরস্ত্রীকরণ মেনে পারমাণবিক ও রাসায়নিক অস্ত্র প্রতিযোগিতার গণবিধ্বংসী সমস্ত অস্ত্রের ব্যবহারকে না বলি। আমরা গণতন্ত্র, সুশাসন এবং আইনের শাসনের গুরুত্বের ওপর জোর দিই।

আমরা একটি স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিই। নারীদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সুবিধার জন্য বর্ধিত সুযোগ তৈরির পাশাপাশি শিশুদের বিরুদ্ধে সব ধরনের সহিংসতা ও শোষণ প্রতিরোধে আরও মনযোগী হব। আমরা সমস্ত ধর্ম, বিশ্বাস এবং বিশ্বাস জুড়ে শান্তির অন্তর্নিহিত এবং শাশ্বত বার্তাগুলো মান্য করি। 

আমাদের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি, ভাষাকে ঐতিহ্য হিসেবে লালন করি। আমরা জলবায়ু দ্বারা সৃষ্ট ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা, স্থানচ্যুতি এবং পরিবেশগত চ্যালেঞ্জগুলোর প্রতি সংবেদনশীল রয়েছি। আমরা প্রেম, সমবেদনা, স্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তা অর্জনের জন্য সহনশীলতা, উদারতা, সহানুভূতি এবং সংহতিকে মেনে চলি। 

সবশেষে ঘোষণায় বলা হয়, শান্তি ও বন্ধুত্বের বার্তা বৈশ্বিকভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার বিষয়টিকে আমলে নিয়েছে বাংলাদেশ। 

ঢাকায় দুই দিনব্যাপী শান্তির সম্মেলন শুরু হয় শনিবার। সম্মেলনে সশরীর ও ভার্চুয়ালি বিশ্বের ৩০ টির বেশি দেশ থেকে প্রায় ৬০ অতিথি বাংলাদেশে আসেন। প্রায় ৪০ জনের মত অতিথি ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হন। মূলত, সম্মেলনে অতিথিদের বক্তব্যদের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার ঘোষণা তৈরি করা হয়। 

সম্মেলনের সমাপনী দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পিকার শিরিন শারমীন চৌধুরী, ব্রিটিশ সাবেক প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন, সিঙ্গাপুরের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গো চক তং, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ও পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত হুসেন হাক্কানি।

এনআই/আইএসএইচ