জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক নীতিমালা শিগগিরই মন্ত্রিপরিষদে
দেশে প্রথমবারের মতো জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চূড়ান্ত করা হয়েছে। খুব শিগগিরই এটি মন্ত্রিপরিষদে উত্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
রোববার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস-২০২১ উপলক্ষে ‘বাংলাদেশের কমিউনিটির উন্নয়নে স্বেচ্ছাসেবার অবদান’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। ইউএন ভলান্টিয়ার বাংলাদেশ, ইউএনএফপিএ, ওয়াটার এইড যৌথভাবে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে।
বিজ্ঞাপন
মন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ ভলান্টিয়ারের একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিলে তারা জানান, বাংলাদেশে কোনো স্বেচ্ছাসেবক নীতিমালা নেই। সংস্থাটির পক্ষ থেকে একটি জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক নীতিমালা প্রণয়নের অনুরোধ জানালে পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করে তার সম্মতি নিয়ে নীতিমালা প্রণয়নের কাজ শুরু করা হয়।
ইতোমধ্যে ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করে অনেকগুলো সভা ও তৃণমূল এবং বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে এই নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, খুব শিগগিরই মন্ত্রিপরিষদে উত্থাপন করে স্বেচ্ছাসেবক নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে।
মো. তাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে বিদ্যমান স্বেচ্ছাসেবার এই মহৎ কাজকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া ও স্বেচ্ছাসেবা দেওয়া ব্যক্তিদের স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে। যা অন্যদের উৎসাহিত করবে। এ নীতিমালা স্বেচ্ছাসেবা চর্চার বিষয়টিকে আর গতিশীল করবে, যা জাতীয় উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে স্বেচ্ছাসেবাকে উন্নয়ন নীতিমালা বিশেষত স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে একটি কৌশল হিসেবে কাজ করবে।
দেশের বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য স্বেচ্ছাসেবায় জনসাধারণের প্রবেশ ও এই চর্চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি জানান, এই পদক্ষেপ নগর ও গ্রামের মানুষের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন, মহামারি, সামাজিক ও অন্যান্য যেকোনো সংকট মোকাবিলায় সক্ষমতা বাড়াতে ভূমিকা রাখবে।
মন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারি আতঙ্কের মধ্যেও সিটি করপোরেশন, জেলা ও উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা, ছাত্র-শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, এনজিও কর্মী এবং সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ অনেকেই স্বেচ্ছাসেবী কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেছেন। অনেকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার ওষুধ, অক্সিজেন, খাদ্য এমনকি বাজার করে দিয়েছেন। আবার অনেকে হাসপাতালে রোগী পৌঁছাতে সহযোগিতা করেছেন। জাতীয় নীতিমালা প্রণীত হলে যেকোনো দুর্যোগ, বিপদে-আপদে মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর একটি স্বীকৃতি পাবে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন, ইউএনভি এশিয়া ও প্যাসিফিকের রিজিওনাল ম্যানেজার সেলিনা মিয়া (ভার্চুয়াল), ইউএনএফপিএর রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. একো নারিতা, বাংলাদেশ নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক তুয়োমো পৌতিয়াইনেন।
এছাড়া স্থানীয় সরকার যুগ্মসচিব মো. নুরে আলম সিদ্দিকী, ইউএনভি বাংলাদেশের কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর মো. আকতার উদ্দিন, ভিএসও বাংলাদেশ বিজনেস পারস্যুইট লিড সালাউদ্দিন আহমেদ এবং ওয়াটার এইড বাংলাদেশের পলিসি ও অ্যাডভোকেসি ডিরেকটর পার্থ হেফাজ শাইখ বক্তব্য রাখেন।
স্বেচ্ছাসেবক দিবসের এ বছরের প্রতিপাদ্য- ‘ভলান্টিয়ার নাউ ফর আওয়ার কমন ফিউচার’।
উল্লেখ্য, কমিউনিটির উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখায় আইভিডি বাংলাদেশ ভলান্টিয়ার এওয়ার্ড-২১ ইউএনডিপি এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সাথে যৌথভাবে এ বছর প্রথমবারের মতো ইউএনভি বাংলাদেশ ২০ জন ইউএন ভলান্টিয়ারকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
এসএইচআর/এমএইচএস