উদ্বোধনের পর আজ থেকে রাজধানীর পাঁচটি হাসপাতালে মহামারি করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। হাসপাতালগুলো হলো- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক), মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল। 

বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া দিনের প্রথম টিকা নিয়েছেন। ঢামেক, বিএসএমএমইউ ও মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ানসহ মোট ৪০০ জন টিকা নেবেন। এছাড়া কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ১০০ ও বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ৬০ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে টিকা দেওয়ার কথা রয়েছে।

সব মিলিয়ে পাঁচ হাসপাতালে নির্দিষ্ট পাঁচ শতাধিক ব্যক্তিকে করোনার টিকা দেওয়ার হবে। এর মধ্যে কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী একটি বুথ বাকি চারটি হাসপাতালে চারটি করে বুথ বসানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার টিকা দেওয়ার পর এ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকবে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এ কয় দিন টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে।

দেশে বুধবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু বেরুনিকা কস্তাকে প্রথম টিকা দেওয়ার মাধ্যমে করোনার টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এদিকে সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের মধ্যে দেশে প্রথম টিকা নিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

টিকা নিয়ে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, আমি আপনাদের সামনেই টিকা নিয়েছি। কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি। গতকাল আমাদের যারা টিকা নিয়েছে, তাদেরও কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়নি, কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একধরনের গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। টিকা সম্পর্কে প্রথমে যে ধরনের মিথ্যা, গুজব ও ষড়যন্ত্র চলছিল, সেগুলো মিডিয়ার কল্যাণে আমরা অনেকটাই প্রতিরোধ করতে পেরেছি। এর মাধ্যমে আমরা আমাদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পেরেছি।

তিনি বলেন, অনেক উন্নত দেশ টিকার জন্য হাহাকার করছে, কিন্তু আমরা সারা পৃথিবীর মধ্যেই প্রথম দিকে টিকা পেয়ে গেছি। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। এই টিকা কার্যক্রমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অনেকগুলো মন্ত্রণালয় কাজ করছে। আমরা সুরক্ষা অ্যাপ তৈরি করেছি।

বাংলাদেশে দেওয়া হচ্ছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা। আট সপ্তাহের ব্যবধানে এ টিকার দুটি ডোজ নিতে হবে। বাংলাদেশে যেহেতু এ টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয়নি, তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী প্রথম দফায় ঢাকার পাঁচটি হাসপাতালে নির্দিষ্ট সংখ্যক ব্যক্তির উপর এ ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে তাদের পর্যবেক্ষণ করা হবে।

এসআই/ওএফ