করোনার টিকা নিয়েছেন সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু বেরুনিকা কস্তা

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে টিকা প্রয়োগ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বুধবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কার্যক্রমটির উদ্বোধন করেন।

এদিন দেশের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে বেক্সিমকোর আনা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার টিকা নিয়েছেন সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু বেরুনিকা কস্তা। তিনি কুর্মিটোলা হাসপাতালের ডায়ালাইসিস ইউনিটের ইনচার্জ।

রুনু বেরুনিকা কস্তা ছাড়াও এদিন আরও চারজনকে প্রাথমিকভাবে টিকা নেওয়ার জন্য বাছাই করা হয়েছে। তারা দেশে করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই সম্মুখসারিতে কাজ করে আসছেন। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তাদেরকে টিকা নেওয়ার জন্য বাছাই করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা পোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কস্তা বলেন, ‘আমি স্বেচ্ছায় টিকা নিতে রাজি হয়েছি। টিকা নিয়ে সাধারণ মানুষের নেতিবাচক ধারণা দূর করে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করাই আমার লক্ষ্য।’

কুর্মিটোলা হাসপাতালের এই নার্স বলেন, ‘বৈশ্বিক মহামারির মধ্যে অনেক দেশ টিকা না পেলেও প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য করোনার টিকার ব্যবস্থা করেছেন। উনি দেশে টিকা আনতে পেরেছেন। এটা আমাদের জন্য গর্বের।’

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনেক ওষুধেই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। করোনার টিকা তৈরি করা হয়েছে একটা ভালো উদ্দেশ্যে। এখন কার বডিতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবে, সেটা তো আর কেউ আগে থেকে বলতে পারবে না। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে ভয় পেলে কেউ-ই এ টিকা নেবে না।’

ল্যাব টেস্টে উত্তীর্ণ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৫০ লাখ টিকা
এদিকে বেক্সিমকোর আনা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৫০ লাখ ডোজ করোনা ভ্যাকসিন ল্যাব টেস্টে উত্তীর্ণ, মানবদেহে ব্যবহারের উপযুক্ত বলে জানিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

মহাখালীতে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘টিকার প্রতিটি লটের নমুনা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করা হয়েছে। এ টিকা ব্যবহারে বাধা নেই।’

‘সুরক্ষা’ অ্যাপ
প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের পরই সবার নিবন্ধনের জন্য খুলে দেওয়া হবে ‘সুরক্ষা’ অ্যাপ। কুর্মিটোলা হাসপাতালে টিকা প্রয়োগ প্রস্তুতি দেখতে এসে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের পর নিবন্ধনের জন্য সুরক্ষা প্ল্যাটফর্ম খুলে দেওয়া হবে। যারা নিবন্ধন করতে পারবেন না, তারা টিকা কেন্দ্র বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়েও নিবন্ধন করতে পারবেন। সেই ব্যবস্থা আমরা রেখেছি।

টিকাদানে কাজ করছে রেড ক্রিসেন্টের ১৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবক
করোনাভাইরাস টিকাদান কার্যক্রম বাস্তবায়নে রাজধানীসহ সারাদেশে সরকারের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। সোসাইটির প্রায় ১৫ হাজার প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক এ কার্যক্রমে সরাসরি অংশগ্রহণ করছে।

টিকা কার্যক্রমে অংশ নেওয়া স্বেচ্ছাসেবকদেরকে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ রেড ক্রস এন্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজের (আইএফআরসি) সহযোগিতায় সরকারের দেওয়া স্বেচ্ছাসেবক গাইডলাইন অনুযায়ী প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। প্রশিক্ষিত এ স্বেচ্ছাসেবকরা টিকাদান কর্মসূচি সফল করতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সব জেলা, উপজেলাসহ তৃণমূল পর্যায়ে স্থানীয় প্রশাসনকে সহযোগিতা করবে।

এমএইচএস