তারা নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে কীভাবে?
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তারা তো এখন নির্বাচন করে না। তারা এ নিয়ে প্রশ্ন তোলে কীভাবে?
বুধবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন। যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স সফর সম্পর্কে অবহিত করতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বিজ্ঞাপন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়ার আমলে বাংলাদেশ পাঁচবার আন্তর্জাতিকভাবে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। জাতীয় পার্টি, বিএনপি ও জামায়াত— মিলিটারি ডিকটেটররা অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে এসব দল সৃষ্টি করেছে। কাজেই এরা হলো ক্ষমতার ছত্রছায়ার দল। ক্ষমতার বাইরে এদের টিকে থাকার কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ এদের শেকড়ে জোর নেই।
তিনি বলেন, পঁচাত্তর সাল থেকে ৯৬ সাল পর্যন্ত এবং পরবর্তীতে ২০০১ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা কেন পারেনি এই দেশকে উন্নত করতে? পারেনি একটি কারণেই। কারণ তারা বাংলাদেশকে কখনো উন্নত করতে চায়নি। বাংলাদেশের অভ্যুদয় চায়নি। বাংলাদেশ স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকুক, চায়নি। বাংলাদেশেটাকে আবার তারা ব্যর্থ রাষ্ট্র করতে চেয়েছিল।
তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের যে উন্নয়ন— এটা তাদের (বিএনপি) কাছে কখনো ভালো লাগবে না। আপনারা তো দেখেছেন, চলন্ত বাসে আগুন দিয়ে কীভাবে মানুষ পোড়ানো হয়েছে। ২০০১ সালে কীভাবে মেয়েদেরকে রেপ করা হয়েছে, কীভাবে মানুষের ঘরবাড়ি দখল করা হয়েছে। চোখ তুলে, হাত কেটে হত্যা করা হয়েছে। সেটা তো দেখেছেন। জিয়াউর রহমানের আমলে হয়তো অনেকে ছোট ছিলেন, দেখতে পারেননি। সে সময় মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করা হয়েছে।
সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশে সব সময় একটা গোলমাল লেগেই থাকুক— এই চেষ্টা তো তারা প্রতিনিয়ত করেই যাচ্ছে। এ দেশে জঙ্গিবাদের সৃষ্টি কে করেছে? কখন হয়েছে? বাংলা ভাই কখন সৃষ্টি হয়েছে? বাংলা ভাই মিছিল করে, পুলিশ পাহারা দেয়। এসব তো বিএনপির আমলেই শুরু হয়েছে। আমরা আসার পর জঙ্গিবাদ দমন করেছি।
তিনি বলেন, এখন তারা ইলেকশন (নির্বাচন) করে না। ইলেকশন নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এরা ইলেকশন নিয়ে প্রশ্ন তোলে কীভাবে? জিয়াউর রহমান কি ইলেকশন করেছিল? ৭৭ সালে তার হ্যাঁ/না ভোট, ৭৮ সালে তার রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, ৭৯ সালে তার যে সংসদ নির্বাচন, সেগুলো কি কোনো নির্বাচন ছিল? ৮১ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কতজন মানুষ হত্যা করা হয়েছিল, কত মানুষের ঘরবাড়ি পুড়িয়েছিল? এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে চলবে? সবাই এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে কীভাবে চলে?
শেখ হাসিনা বলেন, তারা ২০১৪ সালে নির্বাচন করবে না। নির্বাচন করবে কীভাবে? ইলেকশন করতে হলে যে সাংগঠনিক শক্তির দরকার হয় সেটা যখন নেই তখন তারা আমরা নির্বাচন করব না বলে নিজেদের দৈন্য প্রকাশ করে। তারা জানে, আওয়ামী লীগ তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত উন্নয়ন করেছে, সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়, আওয়ামী লীগ জিতে যায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব অর্থ চুরি করে নিয়ে বিদেশে আরাম-আয়েশে দিন কাটাচ্ছে। সামান্য কিছু টাকা আমরা উদ্ধার করে এনেছি। সেটা খালেদা জিয়ার এক ছেলের টাকা। আর বাকিটা তো আছে। তারা সেখানে ভালোভাবে ব্যবহার করছে। বাংলাদেশের মধ্যে কীভাবে গোলমালটা পাকাবে, আজ এখানে বোমা হামলা, কাল ওখানে মন্দির ভাঙা, মন্দিরে কোরআন শরীফ রাখা- এসব কারা নিয়ন্ত্রণ করে, কোথা থেকে আসে?— এসব তথ্য তো বের হচ্ছে।
তিনি বলেন, আপনারা সেগুলো দেখেন। সাংবাদিকরা যদি প্রশ্ন করেন, ষড়যন্ত্র কোথায়, তাহলে আর যাব কোথায়? আপনারা কী চান? যে এই দেশে ইলেকশন না হোক? এই দেশের ইলেকশন প্রশ্নবিদ্ধ থাক? এই দেশে উন্নয়ন কাজ থমকে যাক? থমকে যে যায়, তা তো দেখেছেন।
এইউএ/আরএইচ/জেএস