সাধারণ অভিভাবকদের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন

করোনাকালে টিউশনের পাশাপাশি অন্যান্য ফি আদায়, পছন্দের ছাত্রীদের ফুল-হাফ ফ্রি সুবিধা দিয়ে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের বঞ্চিত করাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহারের বিরুদ্ধে।  

প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা এসব অভিযোগ তুলেছেন। তবে অধ্যক্ষ দাবি করছেন, তার বিষয়ে আনা অভিযোগগুলো মিথ্যা ও বানোয়াট। তিনি এও বলছেন যে, তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। 

বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে সাধারণ অভিভাবকদের পক্ষে এসব অভিযোগ সম্পর্কে জানান আনিসুর রহমান আনিস।

লিখিত বক্তব্যে আনিসুর রহমান বলেন, ২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) টিউশন ফি ছাড়া কোনো ফি ধার্য না করার নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি ২০২০ সালে যাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় করা হয়েছে, তাদের তা ফেরত দিতে বা পরবর্তী বেতনের সঙ্গে সমন্বয় করতে বলা হয়েছে। অথচ অধ্যক্ষ তা দেননি। উল্টো সরকারি আদেশ অমান্য করে তিন হাজার টাকা করে ২০২১ সালের সেশন চার্জ আদায় করেছেন। এটি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। 

অভিভাবকদের পক্ষে তিনি আরও অভিযোগ করেন, যৌক্তিক ফুল বা হাফ ফ্রির আবেদন করা হলে অধ্যক্ষ তা আমলে নেননি। বরং তিনি নিজের পরিচিত শিক্ষার্থীদের হাফ ফ্রি/ফুল ফ্রি করেন। প্রকৃত আবেদনকারীরা দিনের পর দিন বিদ্যালয়ে ঘুরেও অধ্যক্ষের সাক্ষাৎ পায়নি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রতি শুক্র ও শনিবার কর্মচারীদের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষা উপলক্ষে প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষ ভাড়া দিয়ে লাখ লাখ টাকা আয় করা হচ্ছে, যার সিংহভাগই কামরুন নাহার আত্মসাৎ করছেন। প্রতিষ্ঠানের ফান্ডে কোনো টাকা জমা দেন না। 

নিয়োগ পরীক্ষায় শিক্ষক, পরিদর্শক ও কর্মচারী যথাসম্ভব কম সংখ্যায় নিয়োগে বাধ্য করেন। তাদের কম দিয়ে বিরাট অঙ্কের টাকা তিনি নিজেই আত্মসাৎ করেন। পরীক্ষাপ্রতি আয় হয় প্রায় এক লাখ থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা। আত্মসাতে সহায়তা করছেন অবসরে যাওয়া অধ্যক্ষের পিএ দিলরুবা খাতুন। অবসরে গিয়েও বিনা বেতনে প্রতিদিন অফিসের কাজ করে যাচ্ছেন শুধুমাত্র অধ্যক্ষের সব অনিয়ম গোপন রাখার জন্য।
 
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ধর্ম অবমাননা করায় স্কুলের শিক্ষক জগদীশ চন্দ্র পালকে হাইকোর্টের আদেশে অপসারণ করা হলেও তাকে স্বপদে বহাল রেখেছেন অধ্যক্ষ। এক শিক্ষকের দুই পদের বেতন-ভাতা উত্তোলনে সহযোগিতা করা, অভিভাবকদের গাড়ি পার্কিংয়ে আদায় করা টাকার সঠিক হিসাব না থাকায় সঠিক ব্যবহার না করা এবং অভিভাবকদের জন্য টয়লেটের ব্যবস্থা না রাখার মতো অভিযোগও রয়েছে। 

এসব অভিযোগ নিয়ে জানতে চাওয়া হয় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহারের কাছে। মুঠোফোনে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, আমার বিরুদ্ধে করা এসব পুরোনো অভিযোগ। যারা অভিযোগ করেছেন, তারা আমার কারণে তাদের স্বার্থ উদ্ধার করতে পারেননি। এ কারণেই মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ করছেন। তারা দফায় দফায় আমাকে হুমকি দিচ্ছেন।

এমএইচএন/আরএইচ