আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম দাবি করেছেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই।  

সোমবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে তিন ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এ দাবি করেন। বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। 

দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আতাউর রহমান ও উপ-সহকারী পরিচালক আফনান কেয়ার নেতৃত্বে একটি দল তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

ড. শাহান আরা বেগমের বিরুদ্ধে ভর্তি-বাণিজ্য ও ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। 

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অধ্যক্ষ শাহান আরা সাংবাদিকদের বলেন, অভিযোগের সত্যতা নেই, নীতি বহির্ভূত কোনো কাজ হয়নি। ভর্তি-বাণিজ্যের বিষয়টি আমার জানা নেই। এত বড় প্রতিষ্ঠান, এখানে গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভর্তি করা হয়। কেউ বাণিজ্য করে থাকলে আমার জানার কথা নয়।

গত ২৯ আগস্ট দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগমের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগমের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ 

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের যোগসাজশে শিক্ষার্থী ভর্তিতে অনৈতিকভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।
 
২০১৯ সালে মতিঝিল শাখায় এসএসসি ফরম পূরণে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণেরও অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। টেস্ট পরীক্ষায় যেসব শিক্ষার্থী অনুত্তীর্ণ হন তাদের কাছ থেকে বিষয়প্রতি ২০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত গ্রহণ করে ফরম পূরণের সুযোগ দেন অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম। পরে ‘বিশেষ বিবেচনায়’ ওই পরীক্ষার্থীদের উত্তীর্ণ করা হয় বলে জানা গেছে।

এছাড়া আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মূল শাখা, বনশ্রী ও মুগদা শাখায় শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে অনৈতিকভাবে টাকা নেওয়ারও অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। জানা যায়, শিক্ষার্থীপ্রতি চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়। প্রাথমিকভাবে স্কুল ফান্ডে ওই টাকা জমা হলেও পরবর্তী সময়ে অধ্যক্ষসহ ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা তা ভাগ করে নেন। এভাবে শাহান আরা বেগম দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।

২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ‘বিশেষ ক্লাসের’ নামে বাধ্যতামূলক অর্থ আদায়ের অভিযোগ পেয়ে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বনশ্রী শাখায় অভিযান চালায় দুদকের একটি দল। দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আতাউর রহমান সরকার ও উপ-সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়ার সমন্বয়ে গঠিত দল অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পায়। ওই সময় অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক তথ্য-উপাত্ত জব্দ করে দুদক।

২০১৯ সালের মে মাসে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষার উত্তরপত্র ঘষামাজা করে নম্বর দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ড।

আরএম/আরএইচ/জেএস