৩ ব্যাংক কর্মকর্তার ৩১ বছরের সাজা
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সোনালী ব্যাংকের তিন কর্মকর্তাকে ৩১ বছরের কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ২৫ লাখ করে মোট ৭৫ লাখ টাকার অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার নোয়াখালীর স্পেশাল জজ (জেলা জজ) আদালত এ রায় দেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, সোনালী ব্যাংকের ফেনীর সোনাগাজী শাখার ম্যানেজার মো. রহিম উল্যাহ খন্দকার, দ্বিতীয় কর্মকর্তা (সেকেন্ড ম্যান) মো. আবুল কালাম ও সহকারী অফিসার মো. মিজানুর রহমান ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ২০১১ সালের ২ অক্টোবর থেকে ২০১২ সালের ১৩ আগস্ট পর্যন্ত দলিলের কাজে ব্যবহৃত ১৬৬টি পে-অর্ডারের ১৯ লাখ ৩৬ হাজার ১৬৫ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।
বিজ্ঞাপন
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২০১১ সালের ২ অক্টোবর থেকে ২০১২ সালের ১৩ আগস্ট পর্যন্ত ফেনী জেলার সোনাগাজীর মতিগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রার অফিসে দলিল রেজিস্ট্রির কাজে ব্যবহৃত ও সরকারি খাতে জমা করার জন্য ওই অফিস থেকে ২০ থেকে ২৫ বান্ডিল চালানে পে-অর্ডার নম্বর, টাকা ও তারিখ উল্লেখ করে ব্যাংকে দাখিল করা হয়। এর মধ্যে ২-১টি সরিয়ে রেখে পরবর্তীতে নগদে উত্তোলন, পে-অর্ডারের টাকার অঙ্ক বাড়িয়ে নগদে উত্তোলন এবং সরকারি খাতে জমার জন্য চালানের সঙ্গে ফেরত আসা পে-অর্ডারসমূহ কিছু গায়েব করে সরকারি খাতে জমা না করে আত্মসাৎ করা হয়। এভাবে ১৬৬টি পে-অর্ডারের মোট ১৯ লাখ ৩৬ হাজার ১৬৫ টাকা নগদে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন আসামিরা।
এটি দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
২০১৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর সোনাগাজী থানায় এ বিষয়ে মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন দুদক উপপরিচালক মো. মশিউর রহমান।
এ প্রসঙ্গে দুদকের আইনজীবী আবুল কাশেম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে সাব রেজিস্ট্রার অফিস থেকে আসা পে-অর্ডার কৌশলে ‘রেজিস্ট্রার কাজে ব্যবহৃত হয়নি’— এমন তথ্য দিয়ে সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন ও আত্মসাৎ করেন। বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পর ব্যাংকের ডিজিএম অফিস ও ঢাকার মতিঝিল অফিস থেকেও দুই দফা তদন্ত করা হয়। তদন্ত কমিটির রিপোর্টেও অভিযোগের সত্যতা মেলে। এরপর সোনালী ব্যাংকের ওই তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
ওই রিপোর্ট ও দুদকের অনুসন্ধানের পরিপ্রেক্ষিতে মামলা দায়ের এবং পরবর্তীতে চার্জশিট হয়। সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আজ আদালত রায় দিয়েছেন— বলেন ওই কর্মকর্তা।
আরএম/আরএইচ/জেএস