মাহবুব তালুকদারের পর পুরো ইসি সংবাদ সম্মেলনে আসছে আজ
স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে গতকাল রোববার (১৪ নভেম্বর) সংবাদ সম্মেলন করেন জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে নির্বাচন এখন আইসিইউতে থাকার মতো অবস্থায় আছে। আর এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে গণতন্ত্র লাইফ সাপোর্টে রয়েছে।
জ্যেষ্ঠ এ কমিশনারের সংবাদ সম্মেলনের পরদিন আজ সোমবার (১৫ নভেম্বর) পুরো কমিশন সংবাদ সম্মেলনের ডাক দিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে ইসির যুগ্ম-সচিব ও পরিচালক (জনসংযোগ) এসএম আসাদুজ্জামান বলেন, সোমবার (১৫ নভেম্বর) বিকেল ৪টায় নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনাররা এতে বক্তব্য রাখবেন।
এদিকে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে রক্তাক্ত উল্লেখ করে স্থানীয় নির্বাচন পরিচালনায় পৃথক কর্তৃপক্ষ চান নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।
তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় ও তার আগে পরে এই পর্যন্ত ৩৯ জন নিহত হন। জীবনের চেয়ে নির্বাচন বড় নয় এই বার্তা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের কাছে পৌঁছাতে সম্ভবত ব্যর্থ হয়েছি। গত ১১ নভেম্বর ৮৩৪টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৮০ জন চেয়ারম্যান পদে আসীন হন। একে আক্ষরিক অর্থে নির্বাচন বলা যায় না। যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই, সেখানে নির্বাচন নেই। ইউপি নির্বাচন দলীয় ভিত্তিতে না হয়ে পূর্বের ন্যায় সবার জন্য উন্মুক্ত হলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ থাকবে না। আমার মতে পৃথক একটি স্থানীয় নির্বাচন কর্তৃপক্ষ গঠন করে এসব নির্বাচন করা যায়। যে নির্বাচন প্রক্রিয়া নির্বাচন কমিশন ঠিক করে না, তার দায় কমিশন কেন নেবে? তবে এই পরিবর্তন রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ব্যাপার।
এর আগে গত ১০ নভেম্বর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা বলেছিলেন, যখন একটা ঘটনা ঘটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অজান্তে ঘটে। তাদের অনুপস্থিতিতে ঘটে যায়। সেটা এতো বড় একটা নির্বাচনী যজ্ঞ যেখানে হাজার-হাজার, লাখ-লাখ লোক একেকটা ধাপে অংশগ্রহণ করে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার একমাত্র উপায় হলো, যারা ভোটের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকেন, তাদের সহনশীলতা। সুতরাং এটার দায়-দায়িত্ব প্রশাসনকে দেওয়া অথবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দেওয়া অথবা নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে দিলে হবে না।
ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, চতুর্থ ধাপে ২৩ ডিসেম্বর ৮৪০ ইউপিতে ভোট হবে। এই ধাপে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২৫ নভেম্বর। বাছাই ২৯ নভেম্বর। আপিল ৩০ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর। আপিল নিষ্পত্তি ৩ ডিসেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৬ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ৭ ডিসেম্বর। এই ধাপে ৩৩টি ইউপিতে ইভিএমে ভোট গ্রহণ করা হবে।
তৃতীয় ধাপে ২৮ নভেম্বর ১ হাজার ৪টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ৫৬৯ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ১০০, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৩২ এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩৩৭ জন প্রার্থী রয়েছেন। এই ধাপের নির্বাচনে ২০টি রাজনৈতিক দল চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী দিয়েছে। এই ধাপে চেয়ারম্যান পদে ৪ হাজার ৪০৯, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১১ হাজার ১০৫ এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩৪ হাজার ৬৩২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। দ্বিতীয় ধাপে ৮৩৪ ইউপি ও প্রথম ধাপে ৩৬৯টি ইউপিতে ভোট-গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
এসআর/এসকেডি