ব্রিটিশ আমলে প্রণীত বিদম্যান পেটেন্ট আইন বাতিল করে নতুন আইন প্রণয়নে সংসদে বিল উত্থাপন করা হয়েছে। 

রোববার (১৪ নভেম্বর) একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনে ১৯১১ সালের এ সংক্রান্ত আইন নতুন করে করতে ‘বাংলাদেশ পেটেন্ট বিল-২০২১’ সংসদে উত্থাপন করেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।

পরে বিলটি ৩০ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

বিলটি সংসদে উত্থাপন করার বিরোধিতা করেছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম।

তিনি বিলটিকে অদ্ভূত আখ্যা দিয়ে বলেছেন, আগের আইনে পেটেন্ট ও ডিজাইন দুটি বিভাগ ছিল। উত্থাপিত বিলে শুধু পেটেন্ট আছে। তিনি এর ব্যাখ্যা দাবি করেন।

পরে শিল্পমন্ত্রী জবাব দিতে গিয়ে বলেন, বিলটি উত্থাপনের পর সংসদীয় কমিটিতে যাবে। তখন সেখানে বিস্তারিত আলোচনা হবে।

নতুন আইন অনুযায়ী পেটেন্ট মালিকের ২০ বছরের জন্য মালিকানা স্বত্ব সংরক্ষিত থাকবে। ২০ বছর পর তা জনগণের সম্পদ হয়ে যাবে। 

বিলে বলা হয়েছে, নতুনত্ব ও উদ্ভাবনী বিষয় বিদ্যমান থাকলে প্রযুক্তিগত যেকোনো পণ্য উদ্ভাবনী পেটেন্ট যোগ্য হবে এটা আইনের মধ্যে বিধান রাখা হয়েছে।

আবিষ্কার, বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ও গাণিতিক পদ্ধতি, ব্যবসা পদ্ধতি, সম্পূর্ণভাবে মানসিক কাজ সম্পাদনের বা খেলাধুলার নিয়মাবলি বা পদ্ধতি এবং এমন কোনো কম্পিউটার প্রোগ্রাম পেটেন্ট সুরক্ষার আওতার বাইরে থাকবে। এছাড়া আইন-শৃঙ্খলা ও নৈতিকতা রক্ষার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে বাণিজ্যিক ব্যবহার রোধ করা প্রয়োজন, এমন উদ্ভাবনসহ আরও বেশ কিছু বিষয় পেটেন্ট সুরক্ষার বাইরে রাখা হয়েছে।

বিলে বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি এই আইনের কোনো আদেশ পালনে ব্যর্থ হয় তাহলে আদালত ক্ষতিপূরণ ধার্য করতে পারবে।

প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীনে সংরক্ষিত কোনো নিবন্ধন বইতে মিথ্যা এন্ট্রি তৈরি করে তাহলে ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। যদি কোনো ব্যক্তি মিথ্যাভাবে উপস্থাপন করেন যে, তার বিক্রিত পণ্য বা ব্যবহৃত প্রক্রিয়া বাংলাদেশে পেটেন্টপ্রাপ্ত বা আবেদন করা হয়েছে তা হলে ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

বিলে বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে কোনো একটি পেটেন্টের একক বা যৌথ উদ্ভাবনকে আবেদনের ফলে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যৌথ উদ্ভাবকের পেটেন্টের সুরক্ষা দেওয়া হবে।

খসড়া আইনে বলা হয়েছে, কোনো ক্ষেত্রে যদি ‘জেনেটিক রিসোর্সের’ অবৈধ ব্যবহার হয়, সেক্ষেত্রে পেটেন্ট হস্তান্তর করে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে দেওয়া যাবে। পেটেন্ট বাতিল এবং অধিকার কার্যকর করার বিধান বিলে রাখা হয়েছে।

এইউএ/জেডএস