দুদকের মামলা
সম্পদ বৈধ করার কৌশলেও শেষ রক্ষা হয়নি স্বামী-স্ত্রীর
কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলাম। তার স্ত্রী মোছা. কামরুন্নাহার কুষ্টিয়ার ইসলামিয়া কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক। তাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ বৈধ করার অপকৌশল নেওয়ার দায়ে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউলকে একটি মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় সহযোগী হিসেবে আসামি করা হয়েছে তার স্ত্রীকে।
বিজ্ঞাপন
অন্যদিকে, স্বামীকে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতার অপরাধে স্ত্রী কামরুন্নাহারের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। এতে তার সহযোগী হিসেবে স্বামী রবিউলকে আসামি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয়, কুষ্টিয়ার উপ-সহকারী পরিচালক নীল কমল পাল বাদী হয়ে দ্বিতীয় মামলাটি দায়ের করেন। দুদকের জনসংযোগ দফতর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এর আগে, ৫২ লাখ ১৬ হাজার টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর প্রকৌশলী রবিউল ইসলামকে প্রধান আসামি করে মামলা করে দুদক। এতে সহযোগী আসামি করা হয় তার স্ত্রী কামরুন্নাহারকে।
দ্বিতীয় মামলায় ৩৯ লাখ ৩৪ হাজার ৬৫২ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে কামরুন্নাহারের বিরুদ্ধে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, কামরুন্নাহারের স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে মোট ৯১ লাখ ৭৩ হাজার ৫৯৯ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে অনুসন্ধানকালে তার গ্রহণযোগ্য আয় যেমন, চাকরির বেতন-ভাতা ও রেমিটেন্স প্রাপ্তি বাবদ ৫২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৪৭ টাকা পাওয়া যায়। বাকি ৩৯ লাখ ৩৪ হাজার ৬৫২ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে। এমনকি জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের বিষয়ে তিনি সন্তোষজনক কোনো ব্যাখ্যাও দিতে পারেননি।
এছাড়া কামরুন্নাহার তার আয়কর রিটার্নে পারিবারিক ও দান মিলিয়ে মোট ব্যয়ের হিসাবে ৬৫ লাখ ৯৬ হাজার ২৯২ টাকা দেখিয়েছেন, যার মধ্যে স্বামীকে ৫০ লাখ টাকা দেওয়ার বিষয়টি বলা হয়েছে।
এজাহারে এ বিষয়ে বলা হয়েছে, স্বামী মো. রবিউল ইসলাম কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত। তার স্ত্রী কামরুন্নাহারের সম্পদ অর্জনের প্রদর্শিত বৈধ উৎস ব্যতীত অন্য কোনো আয় না থাকার পরও নিজের ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থকে বৈধ করতে স্ত্রীর কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা উপহার গ্রহণের মিথ্যা নাটক সাজিয়ে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখতে সহায়তা করেছেন। এ কারণে স্বামী রবিউলকে সহযোগী আসামি করা হয়েছে।
তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারাসহ দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
আরএম/আরএইচ/জেএস