আন্তর্জাতিক ফাইন্যান্সিয়াল স্ক্যামার চক্রের ২ সদস্য গ্রেফতার
বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আত্মসাৎ ও অবৈধভাবে লেনদেনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক ফাইন্যান্সিয়াল স্ক্যামার চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিট।
গ্রেফতাররা হলেন- মো. জিয়াউল হক ও মো. সাজিদ হাসান সেতু।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে সিরাজগঞ্জ জেলা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের একটি টিম।
সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের বরাতে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন বুধবার (১০ নভেম্বর) জানান, গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে একটি বিদেশি বিনিয়োগ পরামর্শক প্রতিষ্ঠানে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আত্মসাৎ ও অবৈধ লেনদেনের অভিযোগ পাওয়া যায়।
আর্থিক প্রতারণার শিকার বিনিয়োগ পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটিতে অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি ব্যাংক হিসাবের তথ্য দিতে হয়। প্রতিষ্ঠানটি অ্যাকাউন্ট ভেরিফিকেশনের অংশ হিসেবে প্রতিটি নতুন রেজিস্ট্রেশন করা অ্যাকাউন্টের বিপরীতে অনধিক ১ ডলারের সমপরিমাণ অর্থ ওই অ্যাকাউন্টের সঙ্গে সংযুক্ত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সাময়িকভাবে দিয়ে থাকে। ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে এই অর্থ ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যেই উক্ত প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে রিটার্ন করে।
গ্রেফতাররা আর্থিক প্রতিষ্ঠানটির এই অ্যাকাউন্ট অথেন্টিকেশন প্রক্রিয়ার সুযোগ নিত। তারা প্রথমে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশি-বিদেশি প্রতারক চক্রের কাছ থেকে Perfect Money, WebMoney, Payoneer অ্যাকাউন্ট ইত্যাদি মাধ্যম ব্যবহার করে ভুয়া নাম ঠিকানা সম্বলিত Social Security Number ও বিদেশি ব্যাংকের বেনামে তৈরি করা অ্যাকাউন্ট ক্রয় করত।
অনলাইন থেকে ক্রয় করা এই তথ্যগুলো কাজে লাগিয়ে তারা প্রতিটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিপরীতে উক্ত বিনিয়োগ পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটির ৩০০/৪০০টি ভুয়া অ্যাকাউন্ট তৈরি করত। এভাবে ৩০০/৪০০টি অ্যাকাউন্ট ভেরিফিকেশনের জন্য অর্থ একসঙ্গে নির্দিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হলে চক্রটি ঐ অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে ফেরত যাওয়ার আগেই অন্য একটি ব্যংক অ্যাকাউন্টে সরিয়ে নিত।
এ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার জন্য তারা মূলত GO2Bank, Chime Bank ইত্যাদি আন্তর্জাতিক মোবাইল ব্যাংকিং প্লাটফর্ম ব্যবহার করত। প্রতারক চক্রটি এ পর্যন্ত অসংখ্য ভুয়া অ্যাকাউন্ট তৈরি করে হাজার হাজার মার্কিন ডলার প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছে বলে প্রথমিকভাবে স্বীকার করেছে।
নতুন ধরনের প্রতারণার এই প্রক্রিয়াটির নাম “New Account Fraud’’। গ্রেফতারদের রমনা মডেল থানায় দায়ের করা মামলায় আজ ৭ দিনের রিমান্ডসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান ফারুক হোসেন।
জেইউ/জেডএস