বাঁ থেকে অধ্যাপক এনামুল হক; প্রয়াত কূটনীতিক মেয়াজ্জেম আলীর স্ত্রী ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির

ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘পদ্ম পুরস্কার’ পেয়েছেন চার বাংলাদেশি নাগরিক। এদের মধ্যে এক বাংলাদেশি পেয়েছেন ‘পদ্মভূষণ’ আর বাকি তিনজন পেয়েছেন ‘পদ্মশ্রী’ পুরস্কার।

মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন জানায়, ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ সোমবার ও মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি ভবনে অনুষ্ঠিত নাগরিক সম্মাননা অনুষ্ঠানে চার বাংলাদেশি নাগরিককে পদ্ম পুরস্কার প্রদান করেন।

‘পদ্মভূষণ’ ও ‘পদ্মশ্রী’ পুরস্কার পাওয়া চার বাংলাদেশি হলেন : প্রয়াত রাষ্ট্রদূত সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী (পদ্মভূষণ), লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী সাজ্জাদ আলী জহির (অব.) (পদ্মশ্রী), প্রত্নতত্ত্বের জন্য অধ্যাপক এনামুল হক (পদ্মশ্রী) ও শিল্পকলার জন্য সনজিদা খাতুন (পদ্মশ্রী)।

ভারতীয় হাইকমিশন জানায়, সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলীকে (মরণোত্তর) পদ্মভূষণ প্রদান করা হয়েছে। প্রয়াত রাষ্ট্রদূত সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিসের একজন বিশিষ্ট সদস্য ছিলেন। তিনি ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ভারতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং দুই দেশের মধ্যে বৃহত্তর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং নিরাপত্তা সহযোগিতা সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে জ্বালানি সহযোগিতা এবং স্থল যোগাযোগ শুরু করার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী সাজ্জাদ আলী জহিরকে (অব.) জনকল্যাণে পদ্মশ্রী প্রদান করা হয়েছে। লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী সাজ্জাদ আলী জহির (অব.) বীর প্রতীক, স্বাধীনতা পদক পুরস্কারপ্রাপ্ত এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ বিষয়ক একজন স্বাধীন গবেষক ও লেখক। তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা থাকা অবস্থায় তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধুর ডাকে যুদ্ধে যোগ দিতে বাহিনী ত্যাগ করেছিলেন। তিনি বাংলাদেশ সরকারের 'ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ' পুরস্কার প্রকল্পের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, যা মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী দেশের নাগরিকদের অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য গঠিত হয়েছিল।

প্রত্নতত্ত্বের জন্য অধ্যাপক এনামুল হককে পদ্মশ্রী প্রদান করা হয়। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা মহাপরিচালক। তিনি একজন বিশিষ্ট প্রত্নতত্ত্ববিদ এবং অত্যন্ত সম্মানিত সাংস্কৃতিক কর্মী যিনি প্রত্নতত্ত্বের ক্ষেত্রে এবং জাদুঘরের উন্নয়নে জীবন উৎসর্গ করেছেন।

শিল্পকলার জন্য সনজিদা খাতুনকে পদ্মশ্রী পুরষ্কারে ভূষিত করা হয়েছে। তিনি বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞ এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রামী শিল্পী সংস্থার অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠাতা এবং ষাটের দশকের শুরুতে বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি নিবেদিত ছায়ানটেরও প্রতিষ্ঠাতা। তার তত্ত্বাবধানে ছায়ানট একটি শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে, শাস্ত্রীয় সঙ্গীত এবং নৃত্যকলার প্রসারে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছে।

এনআই/এসকেডি