নৌবাহিনীর প্রশিক্ষণ, দেশ গঠন ও পার্বত্য এলাকায় মানবিক সহায়তায় অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ কাপ্তাইয়ের বানৌজা শহীদ মোয়াজ্জামকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) রাষ্ট্রপতি প্রধান অতিথি হিসেবে বঙ্গভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে বানৌজা শহীদ মোয়াজ্জমকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড দেন।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির পক্ষে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল বানৌজা শহীদ মোয়াজ্জম ঘাঁটির অধিনায়কের হাতে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড তুলে দেন।

এ সময় মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসামান্য অবদানের কথা স্মরণ করেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আধুনিক নৌবাহিনী গড়ে তোলার সুদূর প্রসারী স্বপ্ন বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনী আজ একটি মর্যাদাশীল ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীতে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের পাশাপাশি বাংলাদেশ নৌবাহিনী দেশ গঠন, উন্নয়ন ও যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ বিশাল সমুদ্রের নিরাপত্তা বিধানের পাশাপাশি মানবপাচার, চোরাচালান রোধ, জেলেদের নিরাপত্তা বিধান, বাণিজ্যিক জাহাজের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিতকরণসহ দেশের ব্লু ইকোনমির বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে নৌবাহিনীর ভূমিকা অনস্বীকার্য।

তিনি দেশের যেকোনো দুর্যোগ মোকাবেলা ও মানবিক সহায়তায় নৌবাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেন।

মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের এই শুভক্ষণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশের জনগণের পবিত্র আমানত নৌ স্থাপনা, যুদ্ধজাহাজ ও সামরিক সরঞ্জাম কাজে লাগিয়ে সব নৌসদস্য তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠা ও পেশাগত দক্ষতার সঙ্গে পালন করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে নৌ সদর দফতরের পিএসও, চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের আঞ্চলিক কমান্ডার, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী নৌ কমান্ডার, বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই ঘাঁটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ও নাবিকদের পেশাগত প্রশিক্ষণ এবং পার্বত্য এলাকায় বিভিন্ন দুর্যোগে উদ্ধার কাজ, মানবিক সহায়তা, পাহাড়ি জনগণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে। নৌবাহিনীর সব স্তরের কর্মকর্তা ও নাবিকদের প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এ ঘাঁটি। পাশাপাশি এ ঘাঁটি সেনা ও বিমানবাহিনীর জন্য ফ্রগম্যানশিপ, স্কুবা ডাইভিং, ওয়াটারম্যানশিপ ইত্যাদি স্বল্পমেয়াদী কোর্স পরিচালনা করে।

বাংলাদেশি নৌ সদস্যদের পাশাপাশি নাইজেরিয়া, ফিলিস্তিন, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা, কাতার, কুয়েতসহ বিভিন্ন দেশের কর্মকর্তা ও নাবিকরা এ ঘাঁটিতে প্রশিক্ষণ নিয়ে আসছে।

কেএম/এমএইচএস