পদ্মা সেতু প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর উদ্যোগ
স্বপ্নের সেতুর ৪১তম স্প্যান বসার মধ্য দিয়ে গত ১০ ডিসেম্বর যুক্ত হয়েছে প্রমত্তা পদ্মার দুই পাড়। ২০২২ সালের শুরুতেই সেতু দিয়ে যান চলাচলের কথা ছিল। তবে অপেক্ষার প্রহর আরও বাড়তে পারে। করোনার কারণে নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করা যাচ্ছে না সেতুর কাজ। তাই পদ্মা সেতু প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লেও বাড়বে না ব্যয়।
২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব তৈরি করেছে বাংলাদেশ সেতু বিভাগ। সেতু বিভাগের সচিব বেলায়েত হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হলেও বাড়বে না ব্যয়।
বিজ্ঞাপন
মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাবে বলা হয়েছে, করোনা পরিস্থিতিতে অনেক চীনা কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতি এবং নদী ভাঙনে ক্ষতির ফলে কাঙ্ক্ষিত সময়ে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ করা যাচ্ছে না। পদ্মা সেতুর কাজে নিয়োজিত বিদেশি পরামর্শক ও চীনা ঠিকাদারের জনবলের একটা অংশ এখনও প্রকল্প এলাকায় ফিরতে পারেননি। চীনা নববর্ষ পালন করতে গত বছর তারা সেদেশে গিয়ে করোনা পরিস্থিতিতে আটকে যান। এ কারণে প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া পদ্মায় তীব্র স্রোতে মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে ভাঙন ধরে। এতে সেতুর ১২৫টি রোডওয়ে স্ল্যাব ও ১৯২টি রেলওয়ে স্ল্যাব নদীতে বিলীন হয়ে গিয়েছে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পটি সরকারের নিজস্ব সম্পদ থেকে অর্থায়ন করা হচ্ছে। ২০০৭ সালের ২৮ আগস্ট প্রকল্প পাস করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। বহুল আলোচিত এ সেতুর তখন ব্যয় ধরা হয় ১০ হাজার ১৬১ কোটি। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার এসে সেতুতে রেলপথ সংযুক্ত করে।
২০১১ সালের ১১ জানুয়ারি প্রথম দফায় সেতুর ব্যয় সংশোধন করা হয়। তখন ব্যয় ধরা হয় ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা। পরবর্তীতে পদ্মা সেতুর ব্যয় আরও ৮ হাজার কোটি টাকা বাড়ানো হয়। এতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। ২০১৮ সালে এর ব্যয় আরও ১৪শ’ কোটি টাকা বাড়ে। পরবর্তীতে পদ্মা সেতুর মোট ব্যায় দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকায়।
এখনও সেতুর আরও কিছু কাজ বাকি আছে। যেমন- রোডওয়ে স্ল্যাব, রেলওয়ে স্ল্যাব, সুপার-টি গার্ডার বসানো। স্ল্যাবের ওপর পিচ ঢালাইয়ের কাজ, আলোকসজ্জা, ল্যাম্পপোস্ট বসানোর কাজ করতে হবে।
বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতুর মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের সঙ্গে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর যুক্ত হবে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটবে স্বপ্নের এ সেতুর মাধ্যমে।
পিএসডি/এইচকে