ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ
চমেক অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ, হল ছাড়ার নির্দেশ
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দ্রুত হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (৩০ অক্টোবর) সাংবাদিকদের এতথ্য জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. শাহেনা আক্তার। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের বিকেল ৫টার মধ্যে হল ছাড়তে হবে।
বিজ্ঞাপন
এছাড়া ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে সার্জারি বিভাগের প্রফেসর মতিউর রহমানকে। কমিটিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ছাত্রদেরকে বিকেল পাঁচটার মধ্যে হল ছাড়তে হলেও ছাত্রীরা পরেও যেতে পারবে। কারণ দূরের জেলায় বাড়ি এমন অনেক ছাত্রী আছে।
অধ্যক্ষ বলেন, তদন্ত কমিটির রিপোর্টের পর কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়ে একজন হাসপাতালে ভর্তি আছে। যেহেতু একজন আহত হয়েছে সে কারণে পুলিশের সঙ্গে কথা বলছি। এ ঘটনায় আইনগত যে ব্যবস্থা নেওয়া যায় সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংঘর্ষে জড়ানো একটি পক্ষ চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন ও আরেকটি পক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চোধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচয় দেয় বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত অভিজিৎ দাশ অভিযোগ করে বলেন, শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) রাতের সংঘর্ষের পর আজকে কলেজের অধ্যক্ষ মিটিংয়ে আমাদেরকে আসতে বলেছিলেন। আসার পর সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির গ্রুপের ছেলেরা আমাদেরকে মারার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। তারা লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে প্রস্তুত ছিলেন। তারা আমাদের জুনিয়র ২য় বর্ষের ছাত্র আকিবকে গুরতর আহত করেছে। সে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি আছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
অধ্যক্ষ যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করে কেন আমাদের ডাকালেন। আমাদের দাবি হচ্ছে যারা হামলাকারী সরাসরি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। যারা আহত হয়েছেন তাদের চিকিৎসার খরচ কলেজ থেকে বহন করতে হবে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের পাঁচলাইশ জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার শহিদুল ইসলাম বলেন, গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে প্রথমে ছাত্রদের মধ্যে ঝামেলা হয়। এরপর মেডিকেল কলেজে আমরা পুলিশ মোতায়েন করি। আজ সকাল ১০টার দিকে আকিব নামের এক ছাত্রকে মেডিকেল কলেজের মূল গেটের কাছাকাছি পুপলার হাসপাতালের সামনে তার মাথায় আঘাত করা হয়। এতে তার মাথা ফেটে যায়। বর্তমানে সে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিবদমান দুই গ্রুপের একটি উত্তেজনা আছে। আমরা প্রচুর সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করেছি। আমরা সর্তক আছি।
এর আগে অধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শনিবার সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে তিনজন আহত হয়েছেন। আহতরা হলে- মাহফুজুল হক (২৩), নাইমুল ইসলাম (২০) এবং আকিব হোসেন (২০)। শুক্রবার রাতেও দুই পক্ষের মধ্যে ছাত্রাবাসে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
কেএম/জেডএস