নর্থ সাউথের বোর্ড অব ট্রাস্টির দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু
দেশের শীর্ষ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টির দুর্নীতি অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ট্রাস্টি ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আজিম উদ্দিন আহমেদ এবং এম এ কাসেম সিন্ডিকেটের দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের তদারকীতে কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) অনুসন্ধানের সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, অনুসন্ধান শুরু করা হয়েছে। দুদকের উপপরিচালক মো. ফয়সালকে অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দুদক মহাপরিচালক সাঈদ মাহবুব খানের আওতাধীন বিশেষ অনুসন্ধান ও তদন্ত বিভাগ থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ জানিয়েছিল আইন ও মানবাধিকার ফাউন্ডেশন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য 'আজিম উদ্দিন ও এম এ কাসেম সিন্ডিকেট' দীর্ঘদিন যাবত প্রতিষ্ঠানটি লুটেপুটে খাচ্ছেন। মূলত এই সিন্ডিকেটের কারণে নর্থ সাউথে অনিয়ম পরিণত হয়েছে নিয়মে। কম মূল্যের জমি বেশি দামে ক্রয়, ডেভেলপার কোম্পানির কাছ থেকে কমিশন নেওয়া, শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি থেকে অবৈধভাবে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যের জন্য বিলাসবহুল গাড়ি ক্রয়, লাখ টাকা করে সিটিং এলাউন্স গ্রহণ, অনলাইনে মিটিং করেও সমপরিমাণ অ্যালাউন্স গ্রহণ, নিয়ম ভেঙে বিশ্ববিদ্যালয় ফান্ডের ৪০৮ কোটি টাকা নিজেদের মালিকানাধীন ব্যাংকে এফডিআর, মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশনা অমান্য করে কয়েকগুণ শিক্ষার্থী ভর্তি ইত্যাদি। তাছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়টির বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদে মদদ দেওয়ারও সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জমা পড়েছে।
এসব অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধনও হয়েছে। গত ১৬ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ড. সুফী সাগর সামস নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়কে দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদের কবল থেকে রক্ষার দাবি জানান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির ২৫ হাজার শিক্ষার্থীর জীবন। এত বেশি অনিয়মের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার মানও ক্রমেই নিম্নমুখী।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ট্রাস্টি ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আজিম উদ্দিন আহমেদ এবং এমএ কাসেম সিন্ডিকেটের হাতে গোটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনই জিম্মি হয়ে আছে। এ দুজন ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য বেনজির আহমেদ, রেহেনা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান ও আজিজ আল কায়সার টিটো এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত বলে দাবি করেন সুফী সাগর সামস।
তার দাবি, আজিম-কাশেম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ অমান্য করে আটটি কমিটির বিপরীতে ২৫টি কমিটি গঠন করে অতিরিক্ত সিটিং অ্যালাউন্স আদায় করেন। এ সব কমিটির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সব ক্ষমতা নিজেদের হাতে কুক্ষিগত করে রেখেছেন তারা। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ-অবৈধ সব কমিটিতেই আজিম বা কাশেম নিয়ম বহির্ভূতভাবে সদস্য হন।
এরপর ২৬ অক্টোবরও মানববন্ধন করা হয়। সেখানেও আজিম উদ্দিন ও এম এ কাসেম সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে একই ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়।
আরএম/এসএম