চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাটের এম এ মান্নান উড়াল সড়কের র‌্যাম্পের পিলারে কোনো ফাটল পাননি বলে দাবি করেছেন র‌্যাম্পটির নকশা প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান ডিজাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (ডিপিএম) ও নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সের কর্মকর্তারা।

বুধবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের আলমাস মোড়ে অবস্থিত র‌্যাম্পের নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সের প্রকল্প কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান তারা। এর আগে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ও নকশা প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তরা সকালে  পিলার দুটি  পরিদর্শন করেছেন।

র‌্যাম্পের নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সের প্রজেক্ট ম্যানেজার ইঞ্জিনিয়ার মনির হোসাইন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার র‌্যাম্পের ডিজাইনকারী প্রতিষ্ঠান ফ্লাইওভারের পিলার পরিদর্শন করেছেন। প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে পিলারে যা দেখা গেছে তা ওই ফাটল না। তা মূলত কনস্ট্রাকশন জয়েন্ট। এখানে সাটারিংয়ের যে জয়েন্ট ছিল, তা প্রপার পজিশনে ছিল না। সাটারিং যখন জয়েন্ট দেয়, সে জয়েন্টের মধ্যে আমরা ফোম ব্যবহার করি। সেই ফোমগুলো এখনো আটকে আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটা কোনো ধরনের ফাটল না। আজকে ডিজাইনকারী প্রতিষ্ঠান ঘটনাস্থলে গিয়ে ওপরে উঠেছে। তারা জায়গাটি পরিষ্কার করছে। তাতে পিলারে কোন ধরনের ফাটল পায়নি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আরও পরীক্ষা-নিরাক্ষা চালাচ্ছি। পরীক্ষা-নিরাক্ষা শেষ হলে ডিজাইনকারী প্রতিষ্ঠান লিখিতভাবে সিডিএকে রিপোর্ট দেবে।’

তিনি বলেন, ‘স্ট্রাকচারে মেজর কোনো ফল্ট নেই র‌্যাম্পে। তবে কনফার্ম হওয়ার জন্য আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। র‌্যাম্পের মুখে ব্যারিয়ার বসানোর কাজটি দুই একদিনের মধ্যেই শুরু হবে।’

র‌্যাম্পটির নকশা প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান ডিজাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (ডিপিএম) কনসালট্যান্টস লিমিটেডের কারিগরি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাটলের মতো যেসব ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, তা মূলত কনস্ট্রাকশন জয়েন্ট।

ডিপিএমের পরিচালক প্রকৌশলী শাহাজাহান আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘র‌্যাম্পটির পিলারসহ বিভিন্ন অংশ পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা দেখা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে, পিলারে কোনো ফাটল নেই। এটা কনস্ট্রাকশন জয়েন্ট। মূল স্টাকচারে ফাটল হয়নি। তিন বছর আগে যেরকম ছিল পিলারের অবস্থা এখনও সে রকম আছে বলে দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, এতোদিন হয়তো কারো চোখে পড়েনি। এটা কোন ধরনের ফাটল নয়।’

তিনি বলেন, ‘এই র‌্যাম্পটি দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ। এই র‌্যাম্পটি ডিজাইন করার সময় সেভাবেই করা হয়েছে। এই র‌্যাম্প দিয়ে সবোর্চ্চ ৫ টন ওজনের গাড়ি চলাচল করতে পারবে। আমরা জানতে পেরেছি এটার ওপর দিয়ে অনেক বড় বড় গাড়ি গেছে। কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার সময় র‌্যাম্পের মুখে ব্যারিকেড দেওয়া ছিল। যাতে ভারী যানবাহন চলাচল করতে না পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ অবস্থায় ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। এটার ডিজাইন করা হয়েছে ছোট গাড়ি চলাচলের জন্য। তবে এ অবস্থায় ছোট গাড়ি চলাচল করতে পারবে। 

ডিপিএমের এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, যেহেতু একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে, তাই আরও গভীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। ভেতরে কোনো ফল্ট আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হবে। যে জায়গাটাতে মনে হচ্ছে ওপর দিয়ে ক্র্যাক থাকতে পারে। সেটি আমরা ভেতরের ক্রংকিটটা বের করে দেখব। এছাড়া আরও গভীরভাবে তদন্ত করে দেখছি। এরপর পর্যবেক্ষণসহ প্রতিবেদন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হবে।’

কারিগরি বিশেষেজ্ঞ দলে আরও ছিলেন ডিপিএমের ব্যবস্থাপনা পরিচারক এমএ সোবহান ও স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার সামি মোহাম্মদ রেজা।

কেএম/এসএম