ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল। শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা নিতে ঢামেকের বহির্বিভাগে অপেক্ষা করছেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুরের বাসিন্দা রেনু বেগম (৪৫)। বারবার বলার পরেও চিকিৎসক তাকে পরদিন (বুধবার) সকাল ৯টায় আসতে বলেন। হঠাৎ শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় জরুরি বিভাগে নিয়ে যায় তার মেয়ে তানিয়া। পরে দুপুর ৩টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের মেয়ে তানিয়া অভিযোগ করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমার মা চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেছেন। বহির্বিভাগের চিকিৎসক যদি আমার মায়ের চিকিৎসা করতেন, তাহলে হয়তো আমার মা মারা যেত না। তিনি দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্ট রোগে ভুগছিলেন।’

তানিয়া বলেন, ‘সকালে ঢামেক হাসপাতালের বহির্বিভাগে নিয়ে আসি। কিন্তু তারা বলেন বুধবার (২৭ অক্টোবর) সকালে নিয়ে আইসেন। বারবার বললাম আমার মা হাঁটতে পারেন না, অনেক অসুস্থ। কিন্তু তারা কোনো কথা শুনল না। আমার মা চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেল।’

তিনি আরও বলেন, আমার মা শ্বাসকষ্টে মারা গেলেও এখন জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বলছেন ময়নাতদন্ত করতে। টিকিটে লিখে দিয়েছেন- পুলিশ কেস। একে তো চিকিৎসা না পেয়ে আমার মা মারা গেল, এখন আবার তারা আমাদের হয়রানি করছেন। আমার মায়ের আগের চিকিৎসাপত্রের কাগজ আছে। তারপরও ময়নাতদন্ত করতে দিয়েছে ডাক্তার।’

তানিয়া আরও বলেন, আমরা এক বোন, ২ ভাই। বাবা নিরাপত্তাকর্মীর চাকরি করেন। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় থাকলেও আমাদের গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি জেলার সদর থানার বাউথীর গ্রামে।

রেনু বেগমের ভাই ইউনুস আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমার বোনকে তারা চিকিৎসা না দিয়ে মেরে ফেলেছে। আবার তারা ময়নাতদন্তের জন্য আমার বোনের লাশ মর্গে রেখেছে। চিকিৎসাও পেলাম না আবার বোনের লাশ কাটাকাটি করবে। তাদের অনেক বুঝালাম, কিন্তু তারা আমার বোনের লাশ দিলো না।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের সহকারী ইনচার্জ (এএসআই) আব্দুল্লাহ খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘বিষয়টি আমরা শুনেছি। চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ রোগীর স্বজনরা করেছেন সেটার সমাধান আমাদের কাছে নেই। বহির্বিভাগ থেকে জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আমরা তাদের থানায় পাঠিয়েছি। তারা যাতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ নিয়ে যেতে পারেন সেজন্য তাদের সাহায্য করা হবে।’

এসএএ/ওএফ