চট্টগ্রামে একটি চোরচক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারদের মধ্যে তিন ভাই ও তাদের এক ভাইয়ের স্ত্রী রয়েছেন। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে চুরি করা ডলার, ডায়মন্ডের কানের দুল, আংটি ও নগদ টাকা। 

সোমবার কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন তাদের গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, একটি চুরির মামলা তদন্ত করতে গিয়ে প্রথমে ইব্রাহিম নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী রোববার রাতে তার আপন দুই ভাই মো. মঈনুদ্দিন ও রহিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়াও মঈনুদ্দীনের স্ত্রী নয়ন তারা ও মো. জাহাঙ্গীর নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, আসামিরা পেশাদার চোর। তারা সংঘবদ্ধ গ্রিল কাটা ও তালা কাটা চোরচক্রের সদস্য। তারা সুযোগ বুঝে বাসার তালা বা জানালার গ্রিল কেটে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান মালামাল চুরি করে নিয়ে যান।  

পুলিশ কর্মকর্তা নেজাম বলেন, গ্রেফতার জাহাঙ্গীর একজন রিকশাচালক। তিন ভাইকে রিকশায় নিয়ে রাতে নগরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ান তিনি। কোনো বাসায় অন্ধকার দেখলেই পেছনের পাইপ বেয়ে উঠে পড়েন এক ভাই মইনুদ্দীন। 

উদ্ধার করা চোরাই মালামাল

জানালা থাকলে গ্রিল বাঁকিয়ে বা কেটে মইনুদ্দীন ঘরে ঢুকে পড়েন এবং কৌশলে মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করেন। চুরির সময় অন্য দুই ভাই ও রিকশাচালক জাহাঙ্গীর পাহারায় থাকেন। মঈনুদ্দীন অত্যন্ত শক্তিশালী। তিনি হাত ও পায়ের সাহায্যে যেকোনো বাসার জানালার গ্রিল বাঁকাতে পারেন পারে। তিনি ইয়াবা ও গাঁজা সেবন করেন। 

গত ১১ অক্টোবর কোতোয়ালি থানার এস.এস খালেদ রোডের এবিসি মাহাবুব হিলসের তৃতীয় তলায় চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কোতোয়ালি থানার এসআই বাবলু কুমার পাল বলেন, মামলা তদন্ত করতে নেমে ১৩ অক্টোবর ইব্রাহিম খলিলকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তিনি জিজ্ঞাসাবাদে চুরির কথা স্বীকার করেন। এরপর বিভিন্ন সময়ে আরও চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নগদ এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা ১৫টি ডায়মন্ডের রিং, নয়টি ডায়মন্ডের কানের দুল, দুটি ডায়মন্ডযুক্ত স্বর্ণের বেসলেট, একটি ডায়মন্ডযুক্ত শাড়ির ক্লিপ ও ডলার উদ্ধার করা হয়েছে। 
 
পুলিশ কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিন বলেন, আসামি মো. জাহাঙ্গীর ছিনতাইয়ের মামলায় আট বছর সাজা ভোগ করে কিছুদিন আগে কারাগার থেকে বের হয়েছেন। কারাগার থেকে বেরিয়ে তিনি চুরির পেশায় যুক্ত হয়ে পড়েন। এছাড়া, মঈনুদ্দীন চুরির অপরাধে দুবার, ছিনতাই ও নারী নির্যাতনের অপরাধে দুবার গ্রেফতার হয়েছে। রহিমের বিরুদ্ধে দুটি মামলা রয়েছে। 

আরও মালামাল উদ্ধারে মঈনুদ্দীন ও অন্যদের তিন দিনের জন্য রিমান্ডে নিতে আদালতে আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

কেএম/আরএইচ