গত কয়েক দিন ধরে যানজটে নাকাল রাজধানীবাসী। এর ধারাবাহিকতায় আজও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকে যানজট দেখা গেছে। যা দুপুর পর্যন্ত চলমান রয়েছে। সকালের মতো তীব্র যানজট দুপুরে না থাকলেও থেমে থেমে গাড়ির চলাচল লক্ষ্য করা গেছে।

তবে রাজধানীর কয়েকটি এলাকায়, বিশেষ করে ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলামটর ও পরীবাগ এলাকায় এখনো সকালের মতো যানজট দেখা গেছে। যানজটের কারণে দীর্ঘসময় অপেক্ষা করে বিরক্ত অনেককে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে গন্তব্যের দিকে রওনা হতে দেখা গেছে। 

অন্যদিকে রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড থেকে রামপুরা-বনশ্রী পর্যন্ত এবং বাড্ডা লিংক রোড থেকে জাহাঙ্গীর গেট পর্যন্ত সকালে তীব্র যানজট ছিল। দুপুরের দিকে জটের তীব্রতা কিছুটা কমেছে। তবে এসব এলাকায় এখনো যানবাহন ধীরগতিতে চলছে।

সোমবার (২৫ অক্টোবর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।

যানজটে আটকে থাকা যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনার বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ায় এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলায় রাজধানীতে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রচণ্ড যানজট হচ্ছে। কয়েক ঘণ্টা হাতে নিয়ে বের হওয়ার পরও নির্দিষ্ট গন্তব্যে সময় মতো পৌঁছাতে পারছেন না অনেকে। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে নানা উন্নয়নমূলক কাজ চলমান থাকায় যানজটের মাত্রা আরও বেড়েছে।

বনশ্রীর বাসিন্দা আব্দুল আজিজ বলেন, সকালে রামপুরা থেকে মেয়েকে বনশ্রীর একটি স্কুলে দিতে গিয়েছিলাম। রাস্তায় এত যানজট ছিল যে পরে মেয়েকে নিয়ে হেঁটে রওনা হই। মেয়েকে স্কুলে দিয়ে সকাল ১০টায় গাড়িতে উঠেছি নিউ মার্কেটে যাব বলে। তিন ঘণ্টা যানজটে থাকার পর দুপুর ১টায় পৌঁছেছি।

কাওরান বাজার থেকে যাত্রী নিয়ে নীলক্ষেতের উদ্দেশে রওনা হন সিএনজি অটোরিকশা চালক ইয়ার হোসেন। তিনি প্রায় এক ঘণ্টা ধরে কলাবাগানে আটকে আছেন যানজটে। তিনি জানান, গত কয়েক দিন ধরে রাজধানীতে যানজট অনেক বেশি। তার মতে, এটাই রাজধানীর আসল রূপ। করোনার কারণে সবকিছু বন্ধ থাকায় যানজট ছিল না। তবে আস্তে আস্তে সবকিছু খুলে দেওয়ায় আগের মতো যানজটের শহর হয়েছে ঢাকা।

এদিকে ধানমন্ডি ৩২ থেকে নিউমার্কেট পর্যন্ত তীব্র যানজট দুপুরে দেখা গেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, কলাবাগান থেকে নীলক্ষেত পর্যন্ত লম্বা গাড়ির লাইন।

এ বিষয়ে এলিফ্যান্ট রোডের সামনে কর্তব্যরত এক ট্রাফিক সার্জেন্ট নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ধানমন্ডি থেকে আজিমপুর পর্যন্ত বেশ কয়েকটি নামিদামি স্কুল রয়েছে। মাঝামাঝি রয়েছে নিউমার্কেট ও ঢাকা কলেজ। এসব কারণে এ এলাকায় সব সময় গাড়ি ও যাত্রীদের চলাচল বেশি। সকালে অফিস টাইম থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ এলাকায় যানজট লেগেই থাকে।

এছাড়া রাজধানীর যানজট-প্রবণ কয়েকটি এলাকায় কর্তব্যরত ট্রাফিক সার্জেন্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজধানীতে আগের মতো পুরোপুরি কর্মব্যস্ততা শুরু হয়েছে। তাই বিশেষ করে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এবং বিকেলের পর সন্ধ্যার দিকে যানজট গত একমাস ধরে বেশি হচ্ছে। তবে কোথাও কোনো দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হচ্ছে না। থেমে থেমে হলেও যানবাহন চলাচল করছে বলে তারা দাবি করেন।

কুড়িল বিশ্বরোড থেকে রামপুরা পর্যন্ত সড়কের যানজটের বিষয়ে গুলশান ট্রাফিক বিভাগের বাড্ডা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার সুবীর রঞ্জন দাস জানান, সকালে বাড্ডা এলাকায় একটি গাড়ি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, এ কারণে সকাল থেকে কিছুটা যানজট ছিল। এমনিতেই সকাল বেলা অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় যানজট থাকে। তবে দুপুর থেকে আবার কমে গিয়ে এখন যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

সন্ধ্যার দিকে অফিস-ফেরত মানুষ বের হলে কিছুটা যানজট সৃষ্টি হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

এমএসি/এসএসএইচ/জেএস