ইভ্যালির নতুন ব্যবস্থাপনা বোর্ডের সভা মঙ্গলবার
হাইকোর্টের নির্দেশনায় গঠিত আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির নতুন বোর্ডের প্রথম সভা মঙ্গলবার (২৬ আক্টোবর) অনুষ্ঠিত হবে। বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন নতুন বোর্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন।
তিনি ঢাকা পোস্টকে জানান, মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এ সভা হবে। সেখানে নতুন বোর্ডর চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন। এটি প্রথম সভা। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বোর্ড কীভাবে কাজ করবে সে বিষয়ে সভায় আলোচনা হবে।
বিজ্ঞাপন
এর আগে গত ১৮ অক্টোবর ইভ্যালির ব্যবস্থাপনার জন্য আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের বোর্ড গঠন করে দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বোর্ড গঠন করেন।
বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন- স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের সাবেক সচিব মোহাম্মদ রেজাউল আহসান, ওএসডিতে থাকা আলোচিত অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ফখরুদ্দিন আহম্মেদ, কোম্পানি আইন বিশেষজ্ঞ আইনজীবী ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ।
এ কমিটির কাজ প্রসঙ্গে হাইকোর্ট বলেন, আদালতের আদেশ পাওয়ার পরপরই তারা (কমিটি) বোর্ড মিটিংয়ে বসবেন। কোথায় কী আছে সবকিছু বুঝে নেবেন। কোম্পানি যেভাবে চলে, সেভাবে প্রথমে বোর্ড মিটিং বসবে। তাদের (বোর্ড) দায়িত্ব হলো টাকাগুলো কোথায় আছে, কোথায় দায় আছে, তা দেখা।
আদালত আরও বলেন, যদি দেখা যায়, কোনো একটি কোম্পানির মিটিং করা সম্ভব হচ্ছে না, তখন কোম্পানি কোর্টের স্যুয়োমটো ক্ষমতা আছে। আদালত বোর্ড গঠন করে দিতে পারেন। এখন এই বোর্ড গঠন করে দেওয়া হলো। কমিটি বসে বিষয়গুলো দেখবে। অডিট লাগবে, তারা অন্য কাজগুলোও দেখবে। এরপর সবকিছু করার পর বোর্ড যদি দেখে কোম্পানিটি চলার যোগ্যতা নেই, তখন অবসায়নের জন্য প্রসিড করবে। কোম্পানি অবসায়ন চেয়ে আবেদনকারী আবেদন করেছে। তখন আবেদনকারীর সঙ্গে বোর্ডও বলবে, কোম্পানিটি অবসায়ন করতে হবে। আর যদি বলে চালানো সম্ভব, তাহলে কোম্পানিটি চলবে। আদালতের লিখিত আদেশ পাওয়ার পরই বোর্ড মিটিং করে আগামী ২৩ নভেম্বর আদালতে অগ্রগতি প্রতিবেদন দেবে এই কমিটি।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির সব নথি তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। সে অনুযায়ী ১১ অক্টোবর বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চে সব নথি দাখিল করেন জয়েন্ট স্টক কোম্পানির রেজিস্ট্রার। তার আগে ২২ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি ও হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট।
অনিয়ন্ত্রিত এসব ই-কমার্স সাইটের মাধ্যমে উচ্চ লেনদেনের বিষয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। তারা জানিয়েছে, ক্রেতাদের কাছ থেকে সংগৃহীত অগ্রিম অর্থের বিপরীতে এসব প্রতিষ্ঠানের কোনো সম্পদ নেই।
এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক গত জুন মাসে ইভ্যালির ওপর একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। এতে উঠে আসে, ইভ্যালির চলতি সম্পদের পরিমাণ ৬৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এর বিপরীতে প্রতিষ্ঠানটির দেনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪০৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। সম্পদের চেয়ে ৬ গুণের বেশি এই দেনা পরিশোধের সক্ষমতা নেই কোম্পানিটির।
গ্রাহকের অর্থ আত্মসাত ও প্রতারণার মামলায় বর্তমানে ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেল ও চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন কারাগারে রয়েছেন।
এসআই/এসএম/জেএস