২০২৬ সালে জাতিসংঘের সভাপতি পদের জন্য বাংলাদেশ নির্বাচনের ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, মিয়ানমার ও দক্ষিণ কোরিয়া পারলে বাংলাদেশ কেন পারবে না।

রোববার (২৪ অক্টোবর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘জাতিসংঘ দিবস-২০২১’ উপলক্ষে এক আলোচনায় এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

ড. মোমেন বলেন, ‘জাতিসংঘের পরবর্তী মহাসচিব এশিয়া থেকে আসলে সেটা যেন বাংলাদেশ থেকে আসে। মিয়ানমার ও সাউথ কোরিয়া যদি পারে, কেন বাংলাদেশ পারবে না? কিন্তু বললেই তো হবে না। উই হ্যাভ টু কালটিভেট, ইউ হ্যাভ টু গ্রো আপ। এমন প্রতিযোগী তৈরি করতে হবে যেন কেউ কনটেস্ট না করতে পারে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ২০২৬ সালে জাতিসংঘের সভাপতি হওয়ার জন্য নির্বাচনের ঘোষণা করব।’

জাতিসংঘের নেতৃত্বে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মোমেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি থাকাকালে ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বে যে পরিমাণ বাংলাদেশির উপস্থিতি ছিল সেটা এখন কমে গেছে জানিয়ে  বলেন, ‘জাতিসংঘের বিভিন্ন বিষয়ে আমরা সাহায্য করছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় জাতিসংঘের নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখনও খুব বেশি অগ্রসর হয়নি। জাতিসংঘের প্রেজেটেশানে বাংলাদেশের উপস্থিতি এখন কম। আমি যখন দায়িত্বে ছিলাম জাতিসংঘের সদর দপ্তরে তিনজন থেকে ২২ জনে উন্নীত করেছিলাম। কিন্তু সম্প্রতি এগুলো কমে গেছে। এখন আমাদের রিপ্রেজেনটেশান বাড়াতে হবে।’

জাতিসংঘ উন্নত ও সমৃদ্ধিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অবদান রয়েছে বলে জানান মোমেন। তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘকে আরও উন্নত ও সমৃদ্ধ করার ক্ষেত্রে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ ভূমিকা আছে। তার একটি বড় ভূমিকা হচ্ছে, জাতিসংঘে ডেভেলপমেন্ট হিউম্যান রাইট তথা মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার, উন্নয়নের অধিকারে জোর দিয়ে একটি প্রস্তাব পেশ করেন। পৃথিবীর ১৯৩টি দেশ তার এই প্রস্তাবকে গ্রহণ করে।’

ড. মোমেন বলেন, ‘জাতিসংঘ আমাদের অনেক প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। তবুও জাতিসংঘের অবদান কোনোভাবেই অস্বীকার করা যাবে না। জাতিসংঘ সামাজিক উন্নয়নে বিশেষ অবদান রেখেছে। সে জন্য জাতিসংঘ বাংলাদেশকে নিয়ে গর্বিত। বাংলাদেশও জাতিসংঘকে নিয়ে গর্বিত। শান্তিরক্ষা মিশনে বর্তমানে জাতিসংঘে বাংলাদেশের অবস্থান এক নম্বরে। শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ ব্র্যান্ডিং। বাংলাদেশের ১ লাখ ৭৬ হাজার পিস কিপার বিভিন্ন দেশে কাজ করেছেন।’

জাতিসংঘকে সার্বজনীন দেখতে চান মোমেন

জাতিসংঘ সার্বজনীন নয় বলে দাবি করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। জাতিসংঘের এ অবস্থানের পরিবর্তনের মাধ্যমে সংস্থাটিকে সার্বজনীন হিসেবে দেখতে চান তিনি।

ড. মোমেন বলেন, ‘আমরা এমন এক জাতিসংঘ চাই যে জাতিসংঘ মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করে। শুধু পাঁচটা দেশের অধিকারের জন্য করে না। জাতিসংঘ এখনও সার্বজনীন নয়। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটা দেশই হলো মাতাব্বর। এই অবস্থার পরিবর্তন দরকার। জাতিসংঘকে আরও প্রাণবন্ত করতে হবে, শক্তিশালী করতে হবে। এটা হচ্ছে মানুষের মুখপাত্র। বিশ্ব নেতৃত্বের মুখপাত্র হওয়া গুটি কয়েক দেশের মুখপাত্র হওয়া উচিত নয়।’

এনআই/এসকেডি