বদলে যাচ্ছে ঢামেকের বহির্বিভাগ
দেশের সাধারণ মানুষের চিকিৎসার অন্যতম ভরসাস্থল ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বহির্বিভাগ একসময় ছিল অবহেলিত। রোগীরা এখানে এসে বসার জায়গা পেতেন না। ছিল না আধুনিক টয়লেটের ব্যবস্থা। পরিবেশও ছিল না উন্নত।
তবে এখন পরিস্থিতি পাল্টে যাচ্ছে। রোগীদের বসার স্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিবেশও উন্নত হচ্ছে। নারী-শিশুদের জন্য আধুনিক টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হকের তত্ত্বাবধানে এসব কাজ হচ্ছে বলে জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে হাসপাতালের বহির্বিভাগে গিয়ে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজারো রোগী ও তাদের স্বজনরা এখানে আসছেন। তাদের বসার জন্য দৃষ্টিনন্দন নকশা সম্বলিত বেঞ্চ স্থাপন করা হয়েছে। লাগানো হয়েছে নানা ফুলের গাছ। বলতে গেলে বহির্বিভাগ এখন অনেকটাই পরিপাটি।
বহির্বিভাগে যারা আসেন, তাদের বড় একটি অংশই নারী-শিশু। তাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে আধুনিক মানের টয়লেট। মায়েরা যাতে শিশুদের দুধ পান করাতে পারেন, সেজন্য একটি ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার নির্মাণ করা হচ্ছে।
বহির্বিভাগে যারা আসেন, তাদের বড় একটি অংশই নারী-শিশু। তাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে আধুনিক মানের টয়লেট। মায়েরা যাতে শিশুদের দুধ পান করাতে পারেন, সেজন্য একটি ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার নির্মাণ করা হচ্ছে।
কথা হয় রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে আসা মো. সিব্বির হোসেনের সঙ্গে। তিনি এসেছেন ভাগ্নেকে নিয়ে। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, আমার ভাগ্নের চিকিৎসার জন্য ঢামেক হাসপাতালে এসেছি। চিকিৎসক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে বলেছেন। কিছুক্ষণ পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে। এখন বেঞ্চে বসে আছি। ভাগ্নেকে নাস্তা করাচ্ছি।
সিব্বির বলেন, এখানে আমি আগে আরও কয়েকবার এসেছি। কিন্তু তখন পরিবেশ এমন ছিল না। ছিল না বসার কোনো ব্যবস্থা। নারী-শিশুদের জন্য আধুনিক টয়লেট বসানো হয়েছে। ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে। সব মিলিয়ে এখানকার পরিবেশ এখন অনেকটাই ভালো।
লালবাগ থেকে ঢামেক হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগীর স্বজন পারুল আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার বোনের স্বামীকে ডাক্তার দেখানোর জন্য এসেছি। এখানকার পরিবেশ দেখে ভালো লাগছে। আমাদের জন্য আধুনিক টয়লেট বসানো হয়েছে। সুন্দর ডিজাইনের বেঞ্চ রয়েছে। বৃষ্টি এলে যেন ভিজতে না হয়, সেজন্য বেঞ্চের উপরে ছাউনির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে।
হাসপাতালের বহির্বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টার আবুল বাশার শিকদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল দেশের মানুষের কাছে চিকিৎসার জন্য একটি ভরসাস্থল। চিকিৎসা নিতে দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে এখানে আসেন। রোগী ও তাদের স্বজনদের জন্য বেঞ্চ বসানো হয়েছে। সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য এখানে ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে। আবার পাশেই ঔষধি গাছ লাগানো হয়েছে। নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য আধুনিক টয়লেট স্থাপন করা হয়েছে।
বহির্বিভাগ নিয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে রোগীরা চিকিৎসা নিতে আমাদের এখানে আসেন। তারা বাস, ট্রেন কিংবা লঞ্চে সারারাত জেগে সকালে পৌঁছান। সঙ্গে ব্যাগ-লাগেজ থাকে। সেগুলো রাখার প্রয়োজন হয়, বিশ্রামের প্রয়োজন হয়। রোগীদের অসুবিধার কথা চিন্তা করে পিডব্লিউডির সহযোগিতায় একজন আর্কিটেক্টের মাধ্যমে ডিজাইন করি। পিডব্লিউডি দ্রুত বরাদ্দ দিয়ে বিভিন্ন ডিজাইনের বেঞ্চ তৈরি করে দেয়।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে একটি আধুনিক টয়লেটও এখানে স্থাপন করা হয়েছে। তাছাড়া একটি ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার নির্মাণের কাজ চলছে। আশা করি দ্রুত হয়ে যাবে।
পরিচালক বলেন, ‘ফুলগাছের পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় একটি ঔষধি গাছ লাগানো হয়েছে। রোগীরা যাতে এখান থেকে ভালো পরিবেশে চিকিৎসা নিয়ে যেতে পারেন সেজন্য আমরা কাজ করছি।’
এসএএ/আরএইচ