কনস্টেবল পদে চাকরি : পুলিশ সদরদফতরের নতুন নির্দেশনা
দেশের ৬৪ জেলায় তিন হাজার শূন্যপদে কনস্টেবল চাকরিপ্রত্যাশীদের জন্য কিছু নির্দেশনা দিয়ে নোটিশ জারি করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। বুধবার (২০ অক্টোবর) পুলিশ সদরদফতর থেকে এই নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সদরদফতরের রিক্রুটমেন্ট অ্যান্ড ক্যারিয়ার প্ল্যানিং-২ বিভাগের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মো. নাসিরুল ইসলাম সাক্ষরিত নোটিশে বলা হয়েছে, ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে সাত ধাপের নিয়োগ পরীক্ষার মধ্যে প্রথম ধাপ (প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিং) সম্পন্ন হয়েছে। এ ধাপে যোগ্য এবং অযোগ্য প্রার্থীদের টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড থেকে এসএমএস-এর মাধ্যমে অবহিত করা হয়েছে। যোগ্য প্রার্থীদের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে http://police.teletalk.com.bd-এ লগইন করে দুই কপি অ্যাডমিট কার্ড প্রিন্ট করে সংশ্লিষ্ট পুলিশ লাইনস্ মাঠে পরবর্তী ধাপে (শারীরিক মাপ ও ফিজিক্যাল এন্ডুরেন্স টেস্ট) অংশগ্রহণের জন্য বলা হলো।
বিজ্ঞাপন
এর আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ট্রেইনি পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় বাংলাদেশ পুলিশ। দেশের ৬৪ জেলায় তিন হাজার শূন্যপদের বিপরীতে ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
এবার কনস্টেবল পদে ন্যূনতম এসএসসি পাস করা ১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশি যেকোনো নারী ও পুরুষ আবেদন করতে পারবেন। তবে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ যাদের বয়স শেষ হয়ে গেছে তারাও এবার আবেদনের সুযোগ পাচ্ছেন। নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা ও অন্যান্য কোটা অনুসরণ করা হবে। এবার নতুন নিয়মে কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
যা থাকছে নতুন নিয়মে
নতুন নিয়মের পরীক্ষার ধাপগুলো হচ্ছে- প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিং, শারীরিক মাপ ও ফিজিক্যাল এন্ডুরেন্স টেস্ট, লিখিত পরীক্ষা, মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষা, প্রাথমিক নির্বাচন, পুলিশ ভেরিফিকেশন ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং চূড়ান্তভাবে প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্তকরণ।
পুলিশ সদরদফতর জানায়, আবেদনকারীরা শুধুমাত্র অনলাইনে পুলিশ সদরদফতরের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদনপত্র পূরণ করে জমা দেবেন। ওয়েবসাইটে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওয়েববেজড স্ক্যানিং করা হবে। আবেদনকারীর মোবাইল নম্বরে একটি এসএমএস করা হবে। এসএমএসে নিয়োগ সংক্রান্ত ওয়েব পোর্টালে লগইন করার জন্য ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দেওয়া হবে। সেই পোর্টালে লগইন করে আবেদনকারীকে নিয়োগ পরীক্ষার প্রবেশপত্র নিতে হবে। প্রবেশপত্র প্রিন্ট করে দুই কপি করে নিয়োগ পরীক্ষার প্রতিটি ধাপে অংশগ্রহণ করতে হবে।
নিয়োগ পরীক্ষা শুরুর দিন প্রার্থীদের পুলিশের নির্ধারিত স্কেলে বুকের মাপ ও ওজন-উচ্চতা নেওয়া হবে। এরপর প্রার্থীর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই করে তাকে পরবর্তী পরীক্ষার জন্য ‘যোগ্য’ হিসেবে বিবেচনা করে তার ফরমে একটি সিল দেওয়া হবে।
পরবর্তী ধাপে অনুষ্ঠিত হবে শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষা। এই পরীক্ষার আগে প্রার্থীকে ‘ইনডেমনিটির ঘোষণাপত্র’ নামে একটি ফরম পূরণ করতে হবে। ফরমে ওই প্রার্থী ‘শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ’ আছে বলে ঘোষণা দিয়ে স্বাক্ষর করবেন।
শারীরিক সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য ধাপে ধাপে ৭টি ইভেন্টে অংশগ্রহণ করতে হবে। এগুলো হচ্ছে- দৌড়, পুশআপ, লং জাম্প, হাই জাম্প, ড্র্যাগিং ও রোপ ক্লাইমিং। এসব ধাপের কোনো একটিতে অকৃতকার্য হলে পরবর্তী ধাপের পরীক্ষায় অংশ নেওয়া যাবে না এবং সেখানেই তার পুলিশ হওয়ার স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে।
শারীরিক সক্ষমতা যাচাইয়ের ৬ষ্ঠ ধাপে রয়েছে ড্র্যাগিং পরীক্ষা। এই ধাপে পুরুষ প্রার্থীদের ১৫০ পাউন্ডের টায়ারকে টেনে ৩০ ফুট দূরত্বে এবং নারী প্রার্থীদের ১১০ পাউন্ড ওজনের টায়ার ২০ ফুট দূরত্বে আনতে হবে। এছাড়াও রোপ ক্লাইমিং পরীক্ষায় পুরুষদের ১২ ফুট ও নারীদের ৮ ফুট দড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে হবে।
শারীরিক সক্ষমতা যাচাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের সব ডকুমেন্ট নিয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। লিখিত পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ গণিত ও সাধারণ বিজ্ঞান বিষয়ে ৪৫ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ১৫ নম্বরের মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এসব পরীক্ষার পর উত্তীর্ণদের পুলিশ ভেরিফিকেশন ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের চূড়ান্তভাবে প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এআর/এইচকে