শেখ রাসেল আজ বাংলাদেশের প্রতিটি শিশু-কিশোর, তরুণ, শুভবোধ সম্পন্ন মানুষের কাছে একটি আদর্শ ও ভালোবাসার নাম। শেখ রাসেল অবহেলিত, পশ্চাৎপদ, অধিকারবঞ্চিত শিশু-কিশোরদের আলোকিত জীবন গড়ার প্রতীক হয়ে গ্রাম থেকে শহর তথা বাংলাদেশের প্রতিটি লোকালয়ে ছড়িয়ে পড়ুক, এটাই প্রত্যাশা।

সোমবার শেখ রাসেল দিবসের এক আলোচনায় এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

সোমবার (১৮ অক্টোবর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থবিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

সভায় মহাহিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবু হেনা রহমাতুল মুনিম, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মিস ফাতিমা ইয়াসমিন এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ বক্তব্য রাখেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্যের নাম দিয়েছিলেন বৃটিশ দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেলের নামে। এই নামটিকে ঘিরে নিশ্চয়ই বঙ্গবন্ধুর মহৎ কোনো স্বপ্ন বা আকাঙ্ক্ষা ছিল। বঙ্গবন্ধু নিজেও ছিলেন বিশ্ব মানবতার উজ্জ্বল দ্যুতি, নিপীড়িত মানুষের বন্ধু, বাঙালি জাতির পিতা, মুক্তিকামী মানুষের মহান নেতা এবং গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও শান্তি আন্দোলনের পুরোধা। সেই ছোট্ট বয়সে শেখ রাসেল যখন টুঙ্গিপাড়ায় বেড়াতে যেতেন, সেখানে বাচ্চাদের জড়ো করতেন, খেলনা বন্দুক তৈরি করে তাদের প্যারেড করাতেন। পরিবারের সহায়তায় তিনি খুদে ওই বাহিনীর জন্য জামা-কাপড় ঢাকা থেকেই কিনে নিতেন, খাবারের ব্যবস্থাও করতেন। শেখ রাসেলের স্বভাব ও আচরণ ছিল অন্য আট দশজন থেকে ব্যতিক্রম, অনায়াসেই যে কেউ তার একনিষ্ঠ ভক্ত এবং বন্ধু হয়ে যেত।

তিনি আরও বলেন, মাত্র ১১ বছর বয়সে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শেখ রাসেল, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের অন্যান্য সসদ্যদের সঙ্গে ঘাতকদের হাতে হত্যার শিকার হন। পৃথিবীতে যুগে যুগে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে কিন্তু এমন নির্মম, নিষ্ঠুর এবং পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড কোথাও ঘটেনি। মা-বাবা, দুই ভাই, ভাইয়ের স্ত্রী, চাচা সবার লাশের পাশ দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে সবার শেষে নিষ্ঠুরভাবে ঘাতকেরা হত্যা করে শেখ রাসেলকে। যাদের সান্নিধ্যে স্নেহ-আদরে হেসে খেলে বড় হয়েছে তাদের নিথর দেহগুলো পড়ে থাকতে দেখে তার মনের কী অবস্থা হয়েছিল! কী কষ্টই না তিনি পেয়েছিলেন! ঘাতকেরা বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের বুলেটের আঘাতে একবারই হত্যা করেছে, কিন্তু শিশু রাসেলকে বুলেটের আঘাতে হত্যা করার আগেই কয়েকবার হত্যা করেছে।

তিনি বলেন, বেঁচে থাকলে আজ শেখ রাসেলের বয়স হতো ৫৭ বছর, তিনি শামিল হতেন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ বিনির্মাণে। ভিশন ২০২১, ২০৩০, ২০৪১, ডেল্টা প্ল্যান, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব নিয়ে তার হাসু আপা বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয় এখন যেমন দেশের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন, তিনিও নিঃসন্দেহে নিজেকে দেশের জন্য নিয়োজিত রাখতেন। তিনি হয়তো বিজ্ঞানী অথবা জাতির পিতার মতো বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার কাণ্ডারি হতেন। কিংবা হতে পারতেন বার্ট্রান্ড রাসেলের মতোই স্বমহিমায় উজ্জ্বল বিশ্বমানবতার প্রতীক।

এসআর/এসএম/জেএস