ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশাল উপজেলার চেলেরঘাট এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের সঙ্গে যাত্রীবাহী বাসের মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় পলাতক থাকা বাস চালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গ্রেফতার চালকের নাম মো. আনসার আলী (৩৬)। তিনি শেরপুরের ঝিনাইগাতীর প্রতাব নগরের মৃত লাল মামুনের ছেলে।

সিআইডির এলআইসির একাধিক চৌকস টিম সোমবার (১৮ অক্টোবর) সকালে নরসিংদীর মনোহরদী থানার গোতাশিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে স্যাপার এম. এ রহিম নামের ওই বাসটির (ঢাকা মেট্রো ব-১১-০১৪৮) চালক আনসার আলীকে গ্রেফতার করে।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান এলআইসির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।

তিনি বলেন, গত ১৬ অক্টোবর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশাল উপজেলার চেলেরঘাট এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা বিকল ট্রাকে যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। ওই দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই পাঁচ জন মৃত্যুবরণ করে। গুরুতর আহত অবস্থায় ১০/১২ জনকে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুই জন মারা যায়।

ঘটনায় নিহতদের মধ্যে দুই জন শিশু, দুই জন নারী ও তিন জন পুরুষ। এর মধ্যে একই পরিবারের চার জন। তারা হলেন- আজমল মন্ডল ওরফে ফজু (৩৫), তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম (২৫), তাদের ছেলে মো. আমানুল্লাহ (৫), তাদের মেয়ে মারিয়া আক্তার ওরফে আজমিনা (৮)। এছাড়া ফজলুল হকের শ্বশুর নজরুল ইসলাম (৫৫) এবং মো. সিরাজ (৩৫) ও হেলেনা (৪০) এ ঘটনা নিহত হন।

ওই ঘটনায় বাস ও বিকল ট্রাকের অজ্ঞাতনামা চালকদের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানায় মামলা হয়। মামলা নং- ১১/৩০৯। সড়ক পরিবহন আইনে দায়ের হওয়া মামলার প্রেক্ষিতে সিআইডি ঘটনাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে। সোমবার সকালে নরসিংদী থেকে ঘাতক বাসের চালক আনসার আলীকে গ্রেফতার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে বাসটির চালক জানায়, গত ১৬ অক্টোবর ঢাকা মহাখালী টার্মিনাল থেকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ৪২ জন যাত্রী নিয়ে শেরপুরের ঝিনাইগাতী বাসস্ট্যান্ডের উদ্দেশে রওনা হয় স্যাপার এম. এ রহিম বাসটি। একই সময়ে একই স্থান থেকে সৌখিন পরিবহনের একটি বাস প্রায় ৫০ জন যাত্রী নিয়ে ময়মনসিংহের উদ্দেশে রওনা হয়। প্রায় পুরো রাস্তাতেই তারা প্রতিযোগিতা করে গাড়ি চালাতে থাকে।

ত্রিশাল থানাধীন চেলেরঘাট এলাকায় পৌঁছালে সৌখিন পরিবহন ও স্যাপার এম. এ রহিম বাসের মধ্যে প্রতিযোগিতার একপর্যায়ে স্যাপার এম. এ রহিম পরিবহনের বাসটি দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি ওভারটেক করতে গিয়ে রাস্তায় পার্কিংরত বিকল ট্রাকে জোরে ধাক্কা দিলে মুহূর্তেই বাসটি ধুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই পাঁচ জন নিহত হয়। আহত ১০/১২ জনকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুই জন মৃত্যুবরণ করে। দুর্ঘটনার পরই ঘাতক চালক আনসার আলী পালিয়ে যায়।

জেইউ/এসএসএইচ