‘জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করার পর চুক্তি অনুযায়ী কাজ শুরু হয়েছে। এখন আরও রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে স্থানান্তর করে ভাসানচরে নেওয়া হবে। আমরা আশা করছি, শিফটিং নভেম্বরের মাঝামাঝিতে শুরু করতে পারব।’

উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল নিয়ে ভাসানচর পরিদর্শনে গিয়ে এসব কথা জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন। শনিবার (১৬ অক্টোবর) রাতে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান তিনি।

রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ভাসানচরে সম্পৃক্ততার জন্য ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করার সপ্তাহখানেকের মাথায় ভাসানচরে পরিদর্শনে গেছেন উচ্চ পর্যায়ের এই প্রতিনিধি দল। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীনের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে রয়েছেন ইউএনএইচসিআর, আইওএমসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রধানরা (কান্ট্রি ডিরেক্টর)।

সচিব বলেন, ‘আমরা ৯ অক্টোবর ভাসানচর নিয়ে এমওইউ সই করলাম। এমওইউ সই করার এক সপ্তাহের মধ্যে একটা হাই লেভেলের টিম ভাসানচর সফর করছে, এখানে সব প্রধানরা আছেন। এখানে অপারেশনাল কাজ চলছে। ভাসানচর নিয়ে এমওইউ হলো, ওটার বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে; বিভিন্ন সংস্থার প্রধানরা খুব খুশি।’

জানা গেছে, ভাসানচরে একদিনের সফর শেষে ত্রাণসচিবসহ প্রতিনিধিদল রোববার (১৭ অক্টোবর) ঢাকায় ফিরবেন।

গত ৯ অক্টোবর ভাসানচর নিয়ে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় হওয়া সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন এবং জাতিসংঘের পক্ষে বাংলাদেশে ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি উহানেন্স ভন ডার স্বাক্ষর করেন।

চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ সরকার ও ইউএনএইচসিআরের যৌথ উদ্যোগে রোহিঙ্গাদের খাদ্য ও পুষ্টি, সুপেয় পানি, পয়োনিষ্কাশন, চিকিৎসা, মিয়ানমারের পাঠ্যক্রম ও ভাষায় অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা এবং জীবিকায়নের ব্যবস্থা করা হবে। বাংলাদেশ সরকার সেখানে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের ও কর্মরত জাতিসংঘ এবং এর সহযোগী সংস্থা ও দেশীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিও কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয় দেখাশোনা করবে।

এছাড়া ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের বসবাসের কারণে পার্শ্ববর্তী স্থানীয় এলাকা ও জনগণের ওপর যদি প্রভাব পড়ে, তা নিরসনে জাতিসংঘের সংস্থাগুলো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

কক্সবাজারের ক্যাম্প থেকে এক লাখ রোহিঙ্গাকে অধিকতর নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে ২ হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয় করে ভাসানচর প্রস্তুত করে বাংলাদেশ সরকার। বছর দুয়েক আগেও ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করা সম্ভব ছিল না আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিষেধাজ্ঞার কারণে।

তবে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে জাতিসংঘের অনিচ্ছা সত্ত্বেও এক হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গাকে নিয়ে ভাসানচরে স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু করে সরকার। এ পর্যন্ত ছয় দফায় ১৮ হাজার ৫২১ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেওয়া হয়েছে।

এনআই/ওএফ