ই-কমার্সে নতুন আইন নয়, দরকার কেন্দ্রীয় অভিযোগ ব্যবস্থাপনা
কেন্দ্রীয় অভিযোগ ব্যবস্থাপনাসহ গ্রাহকবান্ধব একাধিক সেবার পদক্ষেপ ই-কমার্স খাতের সমস্যার সমাধান করতে পারে। এ খাতের অনিয়মরোধে বর্তমান আইন বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে পারলে নতুন আইন বা কোনো নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের দরকার হবে না।
শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ অডিটোরিয়ামে ‘ই-কমার্স পলিসি টক এড্রেসিং ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভুলেশন’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা এসব মত তুলে ধরেন। ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বিজ্ঞাপন
আলোচনায় ডাক বিভাগের মহাপরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ডাক বিভাগে ই-কমার্স সেবা সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে লজিস্টিক সেবাকে আরও ডিজিটাইজড করার প্রস্তাব এসেছে। ধাপে ধাপে এগুলো ডাকসেবায় যুক্ত করা হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাফিজুর রহমান বলেন, সরকার ডিজিটাল কমার্স নির্দেশিকা তৈরি করেছে। এই নির্দেশিকার মাধ্যমে ঝুঁকিমুক্ত লেনদেন বন্ধ হয়েছে। প্রস্তাবিত বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে এ খাতের অনিয়ম কমে যাবে এবং ক্রেতারা নিরাপদে কেনাকাটা করতে পারবেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এইএচএম সফিকুজ্জামান অনলাইনে যুক্ত হয়ে বলেন, ই-কমার্সে অনিয়ম রোধ ও প্রকৃত উদ্যোক্তাদের জন্য সরকার লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির জন্য কাজ করবে। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা যেন টিকে থাকে সেভাবে নীতি ও বিধি তৈরি করা হবে।
বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম বলেন, অসম প্রতিযোগিতা ও বাজার নিয়ন্ত্রণের কোনো অপচেষ্টা দেখলে সরকার ও প্রতিযোগিতা কমিশন সেখানে হস্তক্ষেপ করবে বা আইন প্রয়োগ করবে। এ সময়ে তিনি উদ্যোক্তা ও গ্রাহকদের অনুরোধ করেন, বাজারে প্রতিযোগিতা বিরোধী কোনো চর্চা দেখলে ওই বিষয়ে যেন প্রতিযোগিতা কমিশনকে অবহিত করা হয়।
ই-ক্যাবের প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার বলেন, অনিয়ম বিভিন্ন সেক্টরের সমস্যা। এটি কোনো নির্দিষ্ট সেক্টরের সমস্যা নয়। ই-কমার্স সেক্টরে অনিয়ম হলে এই বিষয়ে আইন ও বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে সরকার। এ ব্যাপারে কোনো সহযোগিতার বিষয় থাকলে তা ই-ক্যাব থেকে করা হবে।
তিনি বলেন, আগামী দিনগুলোতে রুরাল ই-কমার্স ও ক্রস বর্ডার ই-কমার্স বিষয়ে কাজ করবে ই-ক্যাব। প্রকৃত উদ্যোক্তাদের জন্য সহযোগিতামূলক কর্মকাণ্ডের বিষয়েও ই-ক্যাব সরকারকে সহযোগিতা করবে।
একশপ-এর ই-কমার্স হেড রেজওয়ানুল হক জামি প্রতারণা রোধে কেন্দ্রীয় অভিযোগ ব্যবস্থাপনা, এসক্রো, লজিস্টিক এগ্রিগেটর ফ্লাটফর্ম ও ইউবিআইডি কীভাবে কাজ করে এবং এসব ব্যবস্থার মাধ্যমে ভবিষ্যতে কীভাবে অনিয়ম রোধ করা যাবে তার একটি কী নোট উপস্থাপন করেন।
চালডাল-এর সিইও ওয়াসিম আলিম তার উপস্থাপনায় ই-কমার্সের প্রয়োজনে শ্রম আইন সংশোধন, ডেলিভারি বাইকে বক্স অনুমোদনসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। নগর পরিকল্পনা থেকে শুরু করে ট্রেড লাইসেন্স প্রক্রিয়া সবই ই-কমার্স বান্ধব হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ড. অনন্য রায়হান বিশ্বজুড়ে ভোক্তা সেবায় বিভিন্ন ধরনের প্রতারণার সমাধানে বিভিন্ন পরামর্শমূলক একটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন।
আজকের ডিল-এর সিইও ফাহিম মাশরুর প্রচলিত ব্যবসা ও ই-কমার্সের সাথে ভ্যাট-ট্যাক্সের নানারকম বৈষম্য তুলে ধরেন।
এসএসএল কমার্জ-এর ডিসিটিও ইফতেখার আলম ইসহাক যথাক্রমে এসক্রো ও ই-কমার্সে ট্যাক্স ভ্যাটের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ই-ক্যাবের উপদেষ্টা ইকবাল জামাল, পেপাই ফ্লাই থেকে রাজিব আহমেদ, ফুডপান্ডার সিইও সৈয়দা আম্বারিন রেজা, দারাজের হেড অব স্টেইক হোল্ডার রিলেশনস মোহাম্মদ সামসুল ইসলাম মাসুদ। অনুষ্ঠানটির আয়োজন সহযোগী হিসেবে ছিল একশপ ও পেপার ফ্লাই।
একে/ওএফ