সার্বিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন

সার্বিয়ার বেলগ্রেডে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোলা, শ্রম ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী ড. দারিজা কিসিক টেপাভসেভিচ এবং বাণিজ্য, পর্যটন ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী টাটজানা মেটিকের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।

শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বেলগ্রেডে অনুষ্ঠিত ন্যামের বিশেষ বৈঠক চলাকালে সাইডলাইনে সার্বিয়ার তিন মন্ত্রীর সঙ্গে পৃথক বৈঠকে মিলিত হন ড. মোমেন। 

বুধবার সার্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে মোমেন জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রদত্ত বৈদেশিক নীতির অংশ হিসেবেই বাংলাদেশ জোট নিরপেক্ষ নীতি অনুসরণ করছে। বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানকারী ইউরোপের অন্যতম প্রথম দেশ হিসেবে সাবেক যুগোস্লাভিয়ার ভূমিকার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

দু্টি বন্ধু রাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দুদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের ওপর জোর দেন মোমেন। এ বিষয়ে তিনি বাংলাদেশ ও সার্বিয়ার মধ্যে ফরেন অফিস কনসালটেশন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব করেন এবং সার্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানান। 

উভয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুদেশের কূটনৈতিক ও সরকারি পাসপোর্টধারীদের ভিসাবিহীন যাতায়াত এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বিষয়ে প্রক্রিয়াধীন সমঝোতা স্মারক দুটি দ্রুত স্বাক্ষরের ওপর জোর দেন। দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনের বিষয়েও আলোচনা করেন।

সার্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং শ্রমমন্ত্রীর সঙ্গে ড. মোমেন

ড. মোমেন বাংলাদেশে অবস্থানরত মিয়ানমারের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সেদেশে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে সার্বিয়ার সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।

অন্যদিকে, সার্বিয়ার শ্রম ও কর্মসংস্থানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে মোমেন বাংলাদেশের জনশক্তিকে সার্বিয়ার অবকাঠামো খাতে কাজে লাগানোর সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের অত্যন্ত পরিশ্রমী জনশক্তি মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অবকাঠামো উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। এদেশের দক্ষ জনশক্তির  অভিজ্ঞতা থেকে সার্বিয়া, বিশেষ করে তাদের অবকাঠামো, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাত অনেক বেশি লাভবান হতে পারে।

সার্বিয়ার শ্রমমন্ত্রী মোমেনের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা চুক্তি সম্পাদনের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ সময় তাদের আলোচনায় আর্থ-সামাজিক বিষয় স্থান পায়। বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য, বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়ণন ও নারী শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নয়নে রাজনৈতিক নেতৃত্বের দৃঢ় ভূমিকার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন সার্বিয়ার শ্রমমন্ত্রী।

এর আগে সোমবার সার্বিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ড. মোমেন বাংলাদেশকে অপার সম্ভাবনার দেশ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, দুদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। 

তিনি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশের উদার বিনিয়োগ নীতির বিষয়টি সার্বিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রীকে অবহিত করেন। মোমেন সার্বিয়ার বাণিজ্য প্রতিনিধি দলকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। এছাড়া তিনি সার্বিয়ার পররাষ্ট্র, বাণিজ্য ও শ্রমমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।

এনআই/আরএইচ