ইসি গঠনে সব সরকারই আইন লঙ্ঘন করেছে : মাহবুব তালুকদার
নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, গত ৫০ বছরে ইসি নিয়োগে কোনো আইন প্রণয়ন করা হয়নি। সংবিধানে বাধ্যতামূলক হলেও সব সরকার এটি লঙ্ঘন করেছে।
রোববার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ‘চলমান স্থানীয় নির্বাচন ও অন্যান্য প্রসঙ্গ- আমার কথা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
মাহবুব তালুকদার বলেছেন, ইসি নিয়োগে আইন প্রনয়ণ অনস্বীকার্য। বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সব দলের সমঝাঝোতা ছাড়া এ আইন করা অসম্ভব। তবে আইন প্রণয়নই যথেষ্ট নয়। আইন প্রণয়ন নির্বাচনের অন্যতম বা প্রধান সোপান হলেও অবশ্যই তা সব দলের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে।
সংবিধানে ইসি নিয়োগে আইন প্রনয়ণের কথা বলা হয়েছে। সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির। গত দুবার নিবন্ধিত অনেক দলের সঙ্গে সংলাপ করে সার্চ কমিটির মাধ্যমে ইসি নিয়োগ করা হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে বর্তমান ইসির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে নতুন কমিশন গঠন নিয়ে আলোচনা রাজনৈতিক মহলে।
এ পরিস্থিতিতে গতবার ‘সার্চ কমিটির’ মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া পাঁচ সদস্যের ইসির মধ্যে একজন মাহবুব তালুকদার নিজের অবস্থান তুলে ধরেন আজকের সংবাদ সম্মেলনে। তবে এবারও সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।
মাহবুব তালুকদার বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন, নির্বাচন প্রক্রিয়া ও নির্বাচন ব্যবস্থাপনা নিয়ে সমঝোতা না হলে দেশব্যাপী অরাজকতা ও প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। নির্বাচনে এখন কিছু জটিল অসুখ চলমান।
মাহবুব তালুকদার বলেন, জটিল অসুখের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় গণতন্ত্রের অবস্থা সংকটাপন্ন। একক ডাক্তারের পক্ষে তাকে বাঁচিয়ে তোলা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে মেডিকেল বোর্ড গঠনের কোনো বিকল্প নেই। মৃত্যুপথযাত্রী গণতন্ত্রকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানো একান্ত অপরিহার্য। আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা গণতন্ত্রহীন নির্বাচন চাই কি না।
তিনি জানান, ৭ অক্টোবর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদের উপ-নির্বাচনে ভোট পড়ে ২০ শতাংশ। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদের উপ-নির্বাচনে ইভিএমে ৭০ শতাংশ ভোট পড়ে।
মাহবুব তালুকদার বলেন, চট্টগ্রাম নগরের ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ডের উপ-নির্বাচনে জামানত হারিয়েও একজন প্রার্থী কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। ওই নির্বাচনে ৮ জন প্রার্থীর সকলেই জামানত হারিয়েছেন। এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা, যা বিশ্বে নজিরবিহীন। আমার মতে, নির্বাচনে একটা নতুন ধারা সূচিত হলো।
তিনি বলেন, এ উপ-নির্বাচনের ফল নির্বাচনের প্রতি জনগণের অনাস্থার বহিপ্রকাশ বলা হলেও ইতিবাচকভাবে বলা যায়, সমাজের সব শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিরা এখন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন এবং জনসমর্থন না থাকলেও জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হচ্ছেন।
এসআর/আরএইচ