এক সংশোধনীতেই প্রকল্প ব্যয় বাড়ল ৩ হাজার কোটি টাকা
নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে না পারায় শেষ সময়ে এসে ‘সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার (ফেজ-৩)’ প্রকল্পটিতে প্রথম সংশোধন আনা হয়েছে। এই সংশোধনীতেই দুই হাজার ৯২০ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে চার বছর। পরিকল্পনা কমিশন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
পরিকল্পনা কমিশন সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রকল্পটি প্রথম সংশোধন করা হয়েছে গত ৫ অক্টোবর একনেক সভায়। প্রকল্পটি জুলাই ২০১৫ থেকে জুন ২০২০ সালে বাস্তবায়ন করার কথা ছিল। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে প্রকল্পটির মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে জুন ২০২১ সাল পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু এ সময়ের মধ্যেও প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শেষ করতে না পারায় প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন মেয়াদ জুন ২০২৫ সাল পর্যন্ত করা হয়েছে। এর বাইরেও প্রকল্পের মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ৪ হাজার ৫৯৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। সংশোধনের মাধ্যমে প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ৭ হাজার ৫১৮ কোটি টাকা। স্থানীয় সরকার বিভাগের এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ঢাকা ওয়াসা।
বিজ্ঞাপন
প্রকল্প সংশোধনের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, উন্নয়ন সহযোগী থেকে পর্যাপ্ত তহবিল প্রাপ্তিতে জটিলতা ছিল, আমান গ্রুপ কর্তৃক হাইকোর্টে রিট পিটিশন, মেঘনা নদীর তীরে চলমান শিল্প কার্যক্রম ও নদীর পানি দূষণের কারণে উন্নয়ন সহযোগীদের উদ্বেগ, প্রকল্পের বিভিন্ন অঙ্গের নির্মাণ ব্যয় বৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি সমন্বয় এবং পরামর্শকের স্পোক অব ওয়ার্ক বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে প্রকল্পটি সংশোধন প্রয়োজন।
প্রকল্পের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, ৪৫০ এমএলডি ক্ষমতাসম্পন্ন সার্ফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নির্মাণের মাধ্যমে ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলনের নির্ভরতা কমানো, বিদ্যমান প্লান্ট-১, প্লান্ট-২ ও প্রস্তাবিত প্লান্ট-৩ এর জন্য স্লাজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন এবং ৯৫০ এমএলডি ক্ষমতাসম্পন্ন ইনটেক পাম্পিং স্টেশন নির্মাণ, ইনটেক পাম্পিং স্টেশন থেকে অপরিশোধিত পানি ট্রিটমেন্ট প্লান্ট পর্যন্ত সরবরাহের জন্য টুইন রো ওয়াটার ট্রান্সমিশন (প্রতিটি ২০০০ মিলিমিটার ডায়া) লাইন স্থাপন এবং সায়েদাবাদ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট হতে ঢাকা শহরের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে পরিশোধিত পানি সরবরাহের জন্য বিতরণ লাইন স্থাপন করা।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে- ৩৪.৩১ একর জমি অধিগ্রহণ, একটি ৪৫০ এমএলডি ক্ষমতাসম্পন্ন সার্ফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নির্মাণ, ৯৫০ এমএলডি ক্ষমতাসম্পন্ন ইনটেক পাম্পিং স্টেশন নির্মাণ, তিনটি ফেজের জন্য স্লাজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন, ডিজাইন ও সুপারভিশনের জন্য ১৩১৫ জনমাস পরামর্শক সেবা, ৫২.৮০ কিলোমিটার ট্রান্সমিশন লাইন ও ৫৪ কিলোমিটার ডিসট্রিবিউশন লাইন স্থাপন এবং ইনটেক ও শোধনাগারে কানেকশনসহ ৩৩ কেভিএ ইলেকট্রিক লাইন স্থাপন।
পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মামুন-আল-রশিদ বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ভূ-উপরিস্থ পানি শোধনাগার নির্মাণ করা হবে। এর মাধ্যমে ঢাকা শহরে ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলনের নির্ভরতা অনেকাংশে কমানো সম্ভব হবে।
এসআর/এসএসএইচ