আশ্রয়ণ প্রকল্পের দৃশ্য /ছবি- সংগৃহীত

৫৬ হাজার বর্গমাইলের ১৩ হাজার একরের বুকে গড়া ওঠা ‘অট্টালিকা’ হবে ‘বাবুই-চড়ুই’দের ঠিকানার ‘বড়াই’। এই ‘বড়াই’ উপহার হিসেবে তুলে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রজনীকান্ত সেনের কবিতার বাবুই-চড়ুইয়ের মতো দেশের ভূমিহীন-গৃহহীন ৬৯ হাজার পরিবারের মাথাগোঁজার ঠাঁই। স্বপ্নের ঘর পাবেন এসব অসহায় মানুষেরা। 

শনিবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় সেই মাহেন্দ্রক্ষণে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হস্তান্তর করা হবে ঠিকানাহীন মানুষদের আশ্রয়। জেগে উঠবেন বেঁচে থাকার নতুন স্বপ্নে, জীবনের নতুন সংগ্রামে। 

আশ্রায়ণ-প্রকল্প প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় একক গৃহ নির্মাণের সামগ্রিক কার্যক্রম সমন্বয় করেছে। মুজিববর্ষে ২১ জেলার ৩৬ উপজেলায় ৪৪টি প্রকল্প গ্রামে ৭৪৩টি ব্যারাক নির্মাণের মাধ্যমে ৩ হাজার ৭১৫টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। একই সঙ্গে ৬৯ হাজার ৯০৪ জন ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে জমি ও ঘর দেওয়ার ঘটনা বিশ্বে এটাই প্রথম। 

তিন প্রকল্পে ১ হাজার ১৭৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬৬ হাজার ১৮৯টি পরিবারকে জমিসহ ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে সরকার। যার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রায়ণ-২ প্রকল্পে ৪১৯ কোটি ৬০ লাখ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ সহনীয় গৃহ নির্মাণ কর্মসূচির ৬৫৯ কোটি ৮২ লাখ ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের গুচ্ছগ্রাম দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পের ৫২ কোটি ৪১ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। এছাড়াও অতিরিক্ত পরিবহন বাবদ ২৬ কোটি ৪৮ লাখ ও জ্বালানি বাবদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১০ কোটি ৪০ লাখ টাকা। 

>> জমি ও ঘর পাবেন ৬৯ হাজার ৯০৪ ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার
>> বিনা পয়সায় দুই শতাংশ খাস জমির মালিকানা ও দুই কক্ষবিশিষ্ট ঘর 
>> তিন প্রকল্পে ব্যয় ১ হাজার ১৭৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা 
>> প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে মুজিববর্ষের উপহার
>> একসঙ্গে এত মানুষকে জমি ও ঘর দেওয়ার ঘটনা বিশ্বে এটাই প্রথম 

এসব পরিবারের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রায়ণ-২ প্রকল্পের মাধ্যমে ২ শতাংশ খাস জমি বন্দোবস্ত দিয়ে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যয়ে ২৪ হাজার ৫৩৮টি পরিবারকে একক গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ সহনীয় গৃহ নির্মাণ কর্মসূচির মাধ্যমে ২ শতাংশ খাস জমি বন্দোবস্ত দিয়ে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩৮ হাজার ৫৮৬টি পরিবারকে একক গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের গুচ্ছগ্রাম দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পের মাধ্যমে ২ শতাংশ খাস জমি বন্দোবস্ত দিয়ে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩ হাজার ৬৫টি পরিবারকে একক গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলার ৮৮ উপজেলায় ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা ২৯ হাজার ৫৭৪। জমি আছে, ঘর নেই এমন পরিবারের সংখ্যা ৮৯ হাজার ৬২৩টি। মোট ১ লাখ ২৯ হাজার ১৯৭টি।

ময়মনসিংহ বিভাগের ৪ জেলার ৩৫ উপজেলায় ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা ১০ হাজার ৬৬৫। জমি আছে, ঘর নেই এমন পরিবারের সংখ্যা ২৫ হাজার ৩৩৮টি। মোট ৩৬ হাজার ৩টি। 

চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলার ১০৩ উপজেলায় ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা ৬১ হাজার ৫৩০টি। জমি আছে, ঘর নেই এমন পরিবারের সংখ্যা ৯৯ হাজার ৭৬৭টি। মোট ১ লাখ ৬১ হাজার ২৯৭টি। 

রংপুর বিভাগের ৮ জেলার ৫৮ উপজেলায় ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা ৫৬ হাজার ৯৯৮টি। জমি আছে, ঘর নেই এমন পরিবারের সংখ্যা ১ লাখ ২৬ হাজার ৮৩৬টি। মোট ১ লাখ ৮৩ হাজার ৮৩৪টি। 

রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলার ৬৭ উপজেলায় ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা ৩৭ হাজার ৫৭০টি। জমি আছে, ঘর নেই এমন পরিবারের সংখ্যা ৫৮ হাজার ৯৩৪টি। মোট ৯৬ হাজার ৫০৪টি। 

খুলনা বিভাগের ১০ জেলার ৫৯ উপজেলায় ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা ৩১ হাজার ৯৬৬টি। জমি আছে, ঘর নেই এমন পরিবারের সংখ্যা ১ লাখ ১০ হাজার ৪৪৫টি। মোট ১ লাখ ৪২ হাজার ৪৪১টি। 

বরিশাল বিভাগের ৬ জেলার ৪২ উপজেলায় ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা ২৭ হাজার ৩২৮টি। জমি আছে, ঘর নেই এমন পরিবারের সংখ্যা ৫৩ হাজার ২৫৬টি। মোট ৮০ হাজার ৫৮৪টি। 

সিলেট বিভাগের ৪ জেলার ৪০ উপজেলায় ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা ২৭ হাজার ৭৩০টি। জমি আছে ঘর নেই এমন পরিবারের সংখ্যা ২৮ হাজার ৬২টি। মোট ৫৫ হাজার ৭৯২টি। 

সারাদেশের ৬৪ জেলার ৪৯২ উপজেলায় ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা ২ লাখ ৯৩ হাজার ৩৬১টি। জমি আছে, ঘর নেই এমন পরিবারের সংখ্যা ৫ লাখ ৯২ হাজার ২৬১টি। সর্বমোট ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৬২২টি। 

পর্যায়ক্রমে সব ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে ঘর দেওয়া হবে। 

এইউএ/ওএফ