বাড্ডার সাব-রেজিস্ট্রার দম্পতির ৩ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ
সোয়া ৩ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ ও দুই কোটি টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুর্নীতির মামলার আসামি হলেন বাড্ডা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সাব-রেজিস্ট্রার জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দায়ের করা মামলার নথিতে দেখা যায়, স্ত্রী বেগম রিনা পারভীন গৃহিণী হওয়া সত্ত্বেও সাব-রেজিস্ট্রার জাহাঙ্গীর আলমের চেয়ে অবৈধ সম্পদ বেশি। অর্থাৎ স্বামীর অবৈধ আয়ে বিত্তবান হয়েছেন স্ত্রী। যে কারণে স্বামী-স্ত্রী পৃথক দুই মামলার আসামি।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (৬ অক্টোবর) দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ উপ-পরিচালক মো. আলী আকবর বাদী হয়ে মামলা দুটি দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামি বাড্ডা সাব রেজিস্ট্রি অফিসের সাব-রেজিস্ট্রার জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে প্রথম মামলায় জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ১ কোটি ৯ লাখ ৮ হাজার ৫০৮ টাকার সম্পদের মালিকানা এবং মোট ৬৪ লাখ ৭২ হাজার ৪৮০ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ গোপন করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
অন্যদিকে সাব-রেজিস্ট্রার জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী বেগম রিনা পারভীনের নামে ২ কোটি ১৭ লাখ ১৭ হাজার ৯৫৬ টাকার অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ পাওয়া যায় দুদকের অনুসন্ধানে। এছাড়া ১ কোটি ৫১ লাখ ৮ হাজার ৭০৫ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের প্রমাণ মিলেছে।
এ বিষয়ে এজাহার সূত্রে আরও জানা যায়, বেগম রিনা পারভীন ২০১৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর দুদকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। তিনি ২০০১-০২ করবর্ষ থেকে আয়কর রিটার্ন জমা দিয়ে আসছেন। তার উল্লেখযোগ্য সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ নামে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল হসপিটাল লিমিটেডের ১৫ লাখ টাকার শেয়ার, টি.এম.এইচ. ব্রিকের ১৮ লাখ টাকার শেয়ার, ১০ লাখ টাকা মূল্যের ট্রাক, রংপুরের এম.আর.বি ব্রিকের ৪০ শতাংশ শেয়ার (১৮ লাখ টাকা), নগদ ব্যাংকে জমা ৭ লাখ টাকা। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় জমির মালিকানা রয়েছে তার।
সব আয়কর বিবরণী যাচাই-বাছাই করলে পারিবারিক ব্যয়সহ তার মোট অর্জিত সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ২ কোটি ৫১ লাখ ২২ হাজার ৭৪৫ টাকা। যার মধ্যে মাত্র ৩৪ লাখ ৪ হাজার ৭৮৯ টাকার বৈধ আয় পাওয়া যায়। অর্থাৎ ২ কোটি ১৭ লাখ ১৭ হাজার ৯৫৬ টাকার অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ পাওয়া যায় দুদকের অনুসন্ধানে। এছাড়া ১ কোটি ৫১ লাখ ৮ হাজার ৭০৫ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের প্রমাণ মিলেছে।
তাদের দু’জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারা এবং মানিন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
আরএম/এসএম